লিবিয়ায় সশস্ত্র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩০ জন নিহত হওয়ার একদিন পর সরকার সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী রবিবার রাজধানী ত্রিপোলির রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে।
নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
শনিবারের প্রথম দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ত্রিপোলি-ভিত্তিক সরকার সমর্থক মিলিশিয়াদের সঙ্গে জোটবদ্ধ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, গত এক মাস মোটামুটি স্থিতিশীল থাকার পর এ সংঘর্ষ লিবিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের দিকে ফিরে যেতে পারে।
২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত অভিযানে দীর্ঘকালীন স্বৈরশাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ও নিহত করার পর থেকে লিবিয়ায় রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।
ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থতা এবং প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দ্বেইবাহের পদত্যাগে অস্বীকৃতির কারণে বর্তমান অচলাবস্থা বেড়েছে।
শনিবারের সংঘর্ষে ভারী কামান ব্যবহার করা হয়েছে। সংঘর্ষে শত শত লোক আটকা পড়েছে এবং হাসপাতাল, সরকারি ও আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংঘর্ষের এলাকায় পোড়া যানবাহন ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন নিহত ও ১৫৯ জন আহত হয়েছে।
লিবিয়ায় ইউনিসেফের প্রতিনিধি মিশেল সার্ভেদেই বলেছেন, নিহতদের মধ্যে একজন ১৭ বছর বয়সী কিশোর এবং পাঁচ বছর বয়সী আরও চারজন আহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে মুস্তফা বারাকা নামে একজন রয়েছেন। তিনি একজন কৌতুক অভিনেতা যিনি মিলিশিয়া এবং দুর্নীতিকে উপহাস করার জন্য তার সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিওগুলোর জন্য পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ-স্ট্রিমিং করার সময় তাকে গুলি করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। তাকে টার্গেট করা হয়েছিল কি না তা স্পষ্ট নয়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস কয়েক ডজন বাসিন্দা এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেছে। তারা তাদের বাড়ি, সরকারি ভবন ও হাসপাতালে আটকে পড়া নারী ও শিশুসহ মানুষের ভয়ঙ্কর দৃশ্য বর্ণনা করেছেন।
একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে অনেক পরিবারের সাথে আটকে পড়া একজন নারী বলেন, ‘আমরা আমাদের চোখের সামনে আমাদের বাচ্চাদের চোখে মৃত্যু দেখছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সেই নিরপরাধ শিশুদের রক্ষা করা, যেমনটি তারা গাদ্দাফির সময় করেছিল।’