আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি। তিনি বলেন, কারও দয়া-দাক্ষিণ্যে নয়, জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, নিজস্ব একটি দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সাধারণ মানুষই দেশের মালিক হবে।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, দেশের মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করবে কারা-কিভাবে দেশ চালাবে। যদি ঠিকমতো দেশ না চলে তাহলে দেশের মানুষ আবার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরিবর্তন করবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন ও সরকার পরিবর্তনই হচ্ছে স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল চেতনা। শহিদের রক্তের সঙ্গে আমরা কখনই বেইমানি করব না। আমরা শহিদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করব।
জাপা চেয়ারম্যান অভিযোগ তুলেন– রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়, আমলাতন্ত্রের যোগসাজশে কিছু ব্যবসায়ী নামধারী লুটপাট করে দেশকে শেষ করে দিচ্ছে। কোনো ব্যবসা নেই, কিন্তু হাজার-কোটি টাকা আয় করছে তারা। যারা দেশের মানুষের সম্পদ লুট করছে তাদের জন্যই সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করছে। দেশে লুটপাটের রাজনীতি চলছে। যে যত লুটপাট করতে পারবে, সে তত সম্মানিত ব্যক্তি। যে যত বড় লুটেরা সে তত দেশপ্রেমিক হিসেবে গলায় মালা নিয়ে ঘুরবে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যারা দেশের জন্য ভালো কাজ করতে চাচ্ছেন তারা যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না।
দেশের মানুষ সুশাসন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষ ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা চায়। যেখানে গরিব ও দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াবে সরকার। এই সরকার গরিব ও দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। দেশের সম্পদ লুট করে যারা হাজার কোটি টাকার মালিক, তাদের পাশে দাঁড়ায় সরকার। যেহেতু ডলার সংকট সৃষ্টি হয়েছে তাই সরকার সব জমি কৃষি কাজের আওতায় আনতে উপদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু যারা কৃষিকাজ করে দেশের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখছেন তাদের বাঁচিয়ে রাখতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।
কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখলে আমরা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগব না উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজনে কৃষি ঋণ মওকুফ করতে হবে। ব্যাংক থেকে যারা হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়, তাদের ঋণ সরকার মাফ করে দেয়। কিন্তু কৃষকের ১০ হাজার টাকা ঋণ মওকুফ হয় না। লুটেরারা হাজার কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংক ফাঁকা করে ফেলে, আর কৃষকদের টাকায় সেই ব্যাংককে বাঁচিয়ে রাখা হয়। ব্যাংক লুটেরাদের জন্য কোনো শাস্তির ব্যবস্থা হয় না। রিশিডিলিউয়িংয়ের মাধ্যমে তাদের ওপরের দিকে তোলা হয়।
তিনি বলেন, ব্যাংক লুটেরাদের এমপি-মন্ত্রী বানানো হয়। আবার ১০ হাজার টাকা ঋণের জন্য কৃষক ঘরে ঘুমাতে পারে না। সামান্য টাকার জন্য পুলিশ কৃষকদের হয়রানি করছে। কৃষকদের বাঁচাতে যতটা ভর্তুকি লাগে তা সরকারকে দিতে হবে।
এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি সাহিদুর রহমান টেপা৷ সাধারণ সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদারের সঞ্চালনায় জাতীয় কৃষক পার্টির নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেখ আলমগীর হোসেন, শেখ হুমায়ুন কবির শাওন, কাজী জামাল উদ্দিন, রমজান আলী ভূঁইয়া, আব্দুল কুদ্দুস শাওন ও আবুল কাশেম।