সরকারের পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে নিহত যুবদল নেতা শাওনের জানাজায় পরিবারের সদস্যদেরও অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গত রাতে পুলিশের প্রহরায় তাকে দাফন করা হয়েছে। এই সরকারে পেটুয়া বাহিনীর গুলিতে ভোলাতে নুরে আলম ও আবদুর রহিমের প্রাণ গেছে।
শুক্রবার(২ সেপ্টেম্বর) বাদ জুমা রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শাওনের গায়েবানা জানাজার আগে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমাদের আরেক ভাই শাওনের প্রাণ গেলো, রক্ত ঝরলো। বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সারাদেশে অসংখ্য জায়গায় একইভাবে সরকারের পুলিশ বাহিনী গুলি চালিয়েছে।
গণতন্ত্র মুক্ত করার সৈনিক নারায়ণগঞ্জের শাওন পুলিশের গুলিতে শাহাদাতবরণ করেছেন। দুই সপ্তাহে আমাদের তিনজন ভাই পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ মিছিল ছিলো। কিন্তু পুলিশ তাতে গুলি চালিয়ে শাওনকে হত্যা করেছে। সে একটি কারখানাতে ওয়েলডিংয়ের কাজ করতো এবং যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিলো। কিন্তু কি অমানবিক, কী হৃদয়বিদারক যে, তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেনি। রাত দুইটায় পুলিশি পাহারায় শাওনের লাশ দাফন করা হয়েছে। দলের নেতা-কর্মী, পরিবারের সদস্য ও তার বন্ধুদের কাউকে সেই জানাজায় অংশ নিতে দেয়নি।
শাওনের এই রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার আত্মত্যাগ আমাদেরকে আরও শক্তিশালী করবে। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যে সংগ্রাম শুরু করেছি, যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে লড়াই আমরা শুরু করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলনের দেশের সমগ্র জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করব। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গুম-খুন-হত্যার মধ্যদিয়ে একদলীয় শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তারা বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।
ফখরুল বলেন, সরকার বাকশাল কায়েমের জন্য গুলি চালিয়ে শাওনসহ অন্যদের হত্যা করেছে। কিন্তু শাওনের রক্ত বৃথা যাবেনা। শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমরা তার রক্তের প্রতিদান নিতে পারব।
গায়েবানা জানাজায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।
পরে শাওনের স্মরণে দোয়া করা হয়।
এদিকে বাদ জুম্মা বগুড়া শহরে গায়েবানা জানাযা নামাজে অংশগ্রহণ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, ওবায়দুর রহমান চন্দন, ভিপি সাইফুল ইসলাম, বগুড়া পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল করিম বাদশাসহ অনেকেই।