গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য মানদণ্ড অনুসারে আমাদের আইন রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা, ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারবে। কিন্তু আমরা যেভাবে বলি, সেভাবে নির্বাচন সবসময় শান্তিপূর্ণ হয় না।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোট দেওয়া নাগরিক অধিকার। কাউকে সেই ভোটদান থেকে বিরত রাখা অপরাধ। এটা বলা কঠিন কত ভোট পড়লে, আমি খুশি হব। এ বিষয়ে এখন কথা বলা কঠিন। তবে দুই শতাংশ ভোট পড়লেই নির্বাচন হয়ে যাবে। কত শতাংশ পড়লে একটা নির্বাচন গ্রহণযাগ্য হবে, সেটা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে।
সিইসি বলেন, আমাদের নির্বাচন কেবল দেশীয়ভাবেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। ভোট শুরু হবে সকাল ৮টায়, শেষ হবে বিকেল ৪টায়। তবে কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লাইন থাকলে ভোট শেষ হতে আরও দেরি হতে পারে। অর্থাৎ যারা ভোট দিতে আসবেন, তাদের ভোট দেওয়া শেষ হলেই ভোট বন্ধ হবে।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট হবে। প্রত্যেক প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট রাখার অনুরোধ করছি, যেন ভোটাররা ভোটদানে বাধাগ্রস্ত না হন।
এসময় নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি সংসদীয় আসনে ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইসিতে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন ৪৩৬ জন।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ১৩৫ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৬৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচনে নারী প্রার্থী হিসেবে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯০ জন। আর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অন্যান্য মিলে ৭৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২৯৯ সংসদীয় আসনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪টি। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৭৪১ ও নারী ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯। এছাড়া সারাদেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন। আগামীকাল রবিবার ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।