শিক্ষকদের দাবি জণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এটি এখন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সচেতন মহলের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো.বজলুর রহমান মিয়া।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ের এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এমনটা জানান। এ মহাসমাবেশে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষক অংশ নেন। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি(বিটিএ) আয়োজিত মহাসমাবেশটি সকাল ৯ টায় শুরু করে শেষ হয় বেলা দুইটার দিকে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো.বজলুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে বিভিন্ন জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য এতে বক্তব্য রাখেন।
মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মো.বজলুর রহমান মিয়া বলেন, ‘এ আন্দোলনের সাথে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছে। আমাদের একদফা একদাবি– মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ চাই। শিক্ষকদের দাবি আজ জনদাবিতে পরিণত হয়েছে৷ এ দাবি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজের সচেতন মহলের দাবি।
তিনি বলেন, ‘সরকারকে আগামী বাজেট পর্যন্ত সময় দেওয়া হল। সামনে জাতীয় নির্বাচন, আমাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন না।’
মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেন সভাপতি। তিনি জানান, আগামী ১১ জুন থেকে অবিরাম ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হবে।’
সমাবেশে বক্তারা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়িভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে আমাদের পাহাড়সম বৈষম্য।
তারা আরও জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে দেওয়া হয়। এ ছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেওয়ায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতনস্কেল সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
এদিকে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের নির্ধারিত অর্থ হাতে পেতেও বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। এছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করেছিলেন তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো প্রতিকার পাননি।
ফরিদপুর বড়দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিউলী বেগম বলেন, আমাদের এমপিওভুক্তি থেকে জাতীয়করণ করে দিলেই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার চৌহারিবাড়ি ভাঙাবাড়ি মতিলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিব শংকর মণ্ডল বলেন, আমি ৯ বছর ধরে শিক্ষকতা পেশায় আছি। শিক্ষকদের ন্যায্যদাবি সম্মানের সঙ্গে পূরণ করতে প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।