সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় দণ্ডিত অ্যাডভোকেট আবদুস সামাদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তার জামিনের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আদালতে আবদুস সামাদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
পরে সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ‘আবদুস সামাদকে সাড়ে ৪ বছরের সাজা দেন বিচারিক আদালত। এর মধ্যে দুই বছর সাজা ভোগ শেষ হয়েছে। অসুস্থতা এবং একজন আইনজীবী এই যুক্তি তুলে ধরে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আপিল বিভাগে তাদের জামিন না দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকায় আদালত আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।’
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সেখানে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়কপথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিক।
ওই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত রায় দেন। রায়ে বিএনপির সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলামসহ তিনজনকে দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মোট ১০ বছর করে এবং অপর ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা দায়রা আদালতে পৃথক আপিল করে জামিন চান সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা। এই আদালতে তাঁদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর হলে এর বিরুদ্ধে গত ববছরের এপ্রিলে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে পৃথক আবেদন করেন আবদুস সামাদসহ সাতজন।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৫ মে হাইকোর্ট তাদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। পরে আপিল বিভাগ একই বছরের ২৭ মে তাদের জামিন স্থগিত করেন।
এই সাতজন হলেন- আবদুস সাত্তার, গোলাম রসুল, আবদুস সামাদ, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম।