বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে, ধার করে যে কাজ করেছে, সেই ঋণ এখন সরকার শোধ করতে পারছে না। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে। এতে সরকার খুব ঘাবড়ে গেছে। শেখ হাসিনা এত ঘাবড়ে গেছেন যে তাঁরা ভয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বিদায় দেওয়া শুরু করেছেন বলে জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার(২০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটি যৌথভাবে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। চলমান কর্মসূচিতে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, পুলিশের হামলা, গ্রেপ্তার এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নিম্ন আদালতে জামিন মঞ্জুর না করার’ প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
বিএনপি মহাসচিব সরকারপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুমি তো বলেছিলে ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে। আজকে চালের দাম ৯০ টাকা কেন? ডালের দাম বেশি কেন; লবণের দাম, চিনির দাম বেশি কেন? সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ একটাই–লুট। লুট করে মানুষের পকেটের টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা–তিনি বলছেন ধৈর্য ধরেন, বিদ্যুৎ পেয়েছেন, আবারও বিদ্যুৎ পাবেন। কিন্তু আমাদের তো জীবন অতিষ্ঠ। লোডশেডিং, লোডশেডিং, লোডশেডিং। প্রতিদিন চারবার-পাঁচবার করে লোডশেডিং হয়। আমাদের হাসপাতালগুলো চলে না, ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, গার্মেন্টস বন্ধ হচ্ছে। গার্মেন্টস–মালিকেরা বলছেন, এইভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিতে হবে। ফ্যাক্টরি বন্ধ হলে হাজার হাজার, লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।
বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের গর্ব করা উচিত পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করার জন্য এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, যে দেশে বিদ্যুৎটা ঠিকমতো দিতে পারে না, সঞ্চালন করতে পারে না, বিতরণ করতে পারে না। সেখানে এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার একটিমাত্র কারণ, সেটা করতে গেলে তারা প্রচুর পরিমাণ কমিশন পায়। সে জন্যই তারা এ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। আজ মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতি করে দেশকে পুরোপুরি পঙ্গু বানিয়ে ফেলেছে। খবরের কাগজে বেরিয়েছে, এই যে ঋণ নিয়ে কাজ করে, বিদেশের কাছ থেকে ধার নেয়, এখন আর শোধ করতে পারছে না। যার ফলে কী হবে, সব বিদেশি সংস্থা বন্ধ করে দেবে। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে। খুব ঘাবড়ে গেছে।
খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এতে করে কী লাভ হয়? মানুষ কি থেমে থাকে? মানুষ ঠিকই দলে দলে বিভিন্নভাবে সমাবেশে উপস্থিত হয়। খুলনাতেও একই ঘটনা ঘটবে। খুলনাতেও লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হবে।
আপনাদের আর এই দেশে শাসন করার কোনো অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, দুর্নীতি-দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। দয়া করে মানে মানে সরে পড়ুন। যদি সরে না পড়েন, তাহলে এ দেশের মানুষ কীভাবে সরাতে হয়, তারা তা জানে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। তারা নির্বাচন পরিচালনা করবে সব দলের অংশগ্রহণে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার গঠিত হবে।