প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে সাভারের আমবাগান এলাকার বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩০ বিশিষ্ট নাগরিক। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ্ন জানিয়ে তাঁরা বলেন, রাতের বেলা পরোয়ানা ছাড়া কাউকে আটক করা সভ্য দেশে কল্পনাতীত। তাঁরা অবিলম্বে শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার (২৯ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ৩০ জনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিনা পরোয়ানায় শামসুজ্জামানকে আটক করে তাঁর সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। সংবিধানের তৃতীয় ভাগের মৌলিক অধিকার অধ্যায়ের ৩৩(১) অনুচ্ছেদে কারণ উল্লেখ না করে কাউকে আটকে রাখা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ শামসুজ্জামানকে আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারেননি। বুধবার দুপুরের পর গোলাম কিবরিয়া নামে যুবলীগের এক নেতার দায়ের করা মামলায় শামসুজ্জামানকে আটক দেখানো হয়েছে।
শামসুজ্জামান ছাড়াও সম্প্রতি গণমাধ্যমকর্মীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক ও হয়রানিরর তথ্য তাঁদের নজরে এসেছে বলেও জানান তাঁরা। নাগরিকেরা বলেন, দিন দিন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তাও হুমকির মুখে।
অবিলম্বে শামসুজ্জামানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিঃশর্ত মুক্তি এবং গণমানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান এই বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
বিবৃতিদাতা বিশিষ্ট নাগরিকরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, আইনজীবী সারা হোসেন, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলি, অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ ও সাংবাদিক ইলিয়াস খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারুফ মল্লিক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী রোজীনা বেগম, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, লেখক দিলশানা পারুল, কবি শওকত হোসেন, লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, লেখক রবিউল করিম মৃদুল, গবেষক জাকারিয়া পলাশ, নারী সংগঠক ও মানবাধিকারকর্মী নাসরীন সুলতানা মিলি, কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ ও সংগঠক আরিফুল ইসলাম আদীব।