ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনটি সর্বস্তরের মানুষকে আইনি সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ৷ তিনি বলেন, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের অধিকার নষ্ট করলে এ আইনে প্রতিকার পাওয়া যায় এবং যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনটির অপপ্রয়োগ হচ্ছে। আমরা চাই না কোনো আইনেরই অপপ্রয়োগ হোক।
বুধবার (৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত মানবাধিকার সংরক্ষণ ও গণতন্ত্র সম্প্রসারণে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকতার এখন অন্যতম সমস্যা হচ্ছে পুঁজির দৌরাত্ম্য। টাকা থাকলেই মালিকরা এখন গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করছেন, যার খড়্গ এসে পড়ছে সাংবাদিকদের ওপর। কোনো সংবাদ লেখার সময় সংবাদকর্মীদের চিন্তা করতে হয়, যে তা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে গেল কিনা।
গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। যেটি বর্তমান সরকার দিচ্ছে। প্রতিদিনই টেলিভিশনগুলোতে টকশোর মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করা হয়। তাতে কিন্তু সরকার হস্তক্ষেপ করে না, কারণ আমরা মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাসী। গণমাধ্যমের এই স্বাধীনতার পাশাপাশি তাদের দায়িত্বশীলতার জায়গা বজায় রাখতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, সিঙ্গাপুরের চারটি টেলিভিশন সরাসরি নিয়ন্ত্রিত। মালয়েশিয়ার মিডিয়া তাদের সরকার নিয়ন্ত্রিত। ভুল/অসত্য তথ্য বা সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের জন্য যুক্তরাজ্যে প্রতি মাসে অসংখ্য লোককে জরিমানা করা হয়। আমাদের দেশে কিন্তু সে ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। সুতরাং এই স্বাধীনতার পাশাপাশি গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিলে সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আজকের দিনটি হলো সাংবাদিকদের এগিয়ে যাওয়ার দিন। তবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের জন্য মূলধারার সাংবাদিকরা প্রায়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই দ্রুত এই আইনের সংশোধন হওয়া দরকার। ফরিদা ইয়াসমিন আরও বলেন, গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। আমরাও সেটা চাই, তবে স্বাধীনতার সঙ্গে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। দেশের মূলচেতনাকে আঘাত করে, এমন কিছু করা যাবে না।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক সমকাল সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল এবং প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুইয়াসহ সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।