কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের শিকার ফুলপরি নির্যাতনে জড়িত শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচ ছাত্রীকে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
নির্যাতনের ঘটনায় এই পাঁচ ছাত্রীকে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার (সাসপেন্ড) করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। কিন্তু ফুলপরীর শঙ্কা, অভিযুক্তদের সাময়িক বহিষ্কার করলে তারা ক্ষতি করতে পারেন। এজন্য তাদের স্থায়ী বহিষ্কার চান তিনি।
শনিবার (৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাবনা ও কুষ্টিয়া পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে ফেরার পর ফুলপরি এই দাবি করেন।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রীটি জানায়, ‘অভিযুক্তদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা না হলে পরবর্তীতে তারা আমার ক্ষতি করতে পারে। এজন্য তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের দুঃসাহস দেখাতে না পারে।’
এ সময় ফুলপরীর বাবা বলেন, ‘তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলাতে পারত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব তারা যেনো আমার মেয়েকে নিরাপত্তা ও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন। ফৌজদারি আদালতে এদের শাস্তি হওয়া উচিত। আমার মেয়ের মতো আর কাউকে যাতে নির্যাতনের শিকার হতে না হয় সেজন্য তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে।’
গত ১ মার্চ ইবি ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত অন্তরা, তাবাসসুম, মীম, উর্মি ও মোয়াবিয়াকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ওই ছাত্রীকে রাতভর র্যাগিং ছাড়াও শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে তার ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে। এতে শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, ইসরাত জাহান মিমি ও হালিমা খাতুন উর্মিসহ কয়েকজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর।
ওই ঘটনায় সেই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও ঘটনাটিতে পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও শাখা ছাত্রলীগ। পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। পরবর্তীকালে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম, হালিমা খাতুন উর্মি, ইশরাত জাহান মিমি ও মায়োবিয়ার সিট বাতিল করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের স্থায়ীভাবে আবাসিকতা বাতিল করা হয়।