মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যে দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান ব্যবস্থা ব্যবহার করে ‘সংলাপ ও আলোচনার’ মাধ্যমে সীমান্তে উত্তেজনা এড়াতে চায় বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমারের সীমান্ত বাহিনী বিদ্যমান ব্যবস্থার মাধ্যমে আলোচনা করবেন যাতে কোনো উস্কানি হলে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা যায়।
রবিবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘মূলত, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটি পদক্ষেপ। হয়তো অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তারা বিষয়টি স্বীকার করেছে।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও বিজিবি সতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভেতরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে । এ কারণে স্থানীয়রা আতঙ্কিত উঠতে পারে। আমাদের নজরদারি রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
তিনি বলেন, সীমান্তে যাতে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি না হয় সেজন্য চেষ্টা চলছে। আমরা অত্যন্ত সতর্ক রয়েছি। বিজিবি বাংলাদেশের ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না।’
এর আগে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে মর্টার শেল ছোড়া, সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমার থেকে নির্বিচারে বিমান গুলি চালানো এবং আকাশপথ লঙ্ঘনের বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।
৩ সেপ্টেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ধুমধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলি বিজিবি বিওপি ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের কাছে মিয়ানমারের দুটি হেলিকপ্টার ও দুটি বিমানকে দেখা যায়।
এ ঘটনায় বাংলাদেশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোকে মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শান্তিকামী জনগণের নিরাপত্তা জন্য মারাত্মক হুমকি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন এবং প্রতিবেশী সুসম্পর্কের পরিপন্থী।
রাখাইন থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের বাসিন্দাদের কোনো অনুপ্রবেশ যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের টেকসই ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে তাদের উৎপত্তিস্থলে একটি নিরাপদ, নিরাপদ এবং অনুকূল পরিবেশ অপরিহার্য বলেও বৈঠকে জোর দেয়া হয়।
গেল আগস্ট মাসে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুটি মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনায় মিয়ানমারকে দুইবার কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে উত্থাপন করেছে।