কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে সুইডেনের পুলিশ। দেশটির বার্তাসংস্থা টিটির বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
টিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইডেনভিত্তিক একটি সংগঠন রাজধানী স্টকহোমে ইরাকের দূতাবাসের সামনে কোরআন এবং ইরাকের পতাকা পোড়ানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন করার পর বুধবার তা মঞ্জুর করেছে স্টকহোম পুলিশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত জুন মাসে স্টকহোম মসজিদের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দুইজন ব্যক্তিও আবেদনকারী হিসেবে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে স্টকহোম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এএফপি; কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা কোরআন পোড়ানোর অনুমতির ব্যাপারটি এড়িয়ে গিয়ে জানান, ইরাকের দূতাবাসের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল একটি সংগঠন এবং স্টকহোম পুলিশ তার অনুমোদন দিয়েছে।
এএফপির পক্ষ থেকে আবেদনপত্রের একটি অনুলিপি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু স্টকহোম পুলিশ তা সরবরাহ করেনি।
গত ২৯ জুন স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এক প্রতিবাদ মিছিলে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এই কাজ যিনি করেছিলেন, সেই সালওয়ান মোমিকা (৩৭) একজন ইরাকি মুসলিম এবং শরণার্থী হিসেবে সুইডেনে গিয়ে সেখানকার নাগরিকত্ব নেন।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় তুরস্ক, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মুসলিম দেশসহ মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কান্ট্রিজ (ওআইসি)। মুসলিম বিশ্বের উদ্যোগে গত ১২ জুলাই এ বিষয়ক একটি প্রতিবাদ প্রস্তাব (রেজোল্যুশন) পাস করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। পরিষদের ৪৭টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ২৮টি সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোটও দিয়েছে।
পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে গত ১৪ জুলাই আহমাদ আলুশ (৩২) নামের এক ব্যক্তি ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাত এবং খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল পোড়ানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে তা মঞ্জুর করে স্টকহোম পুলিশ। তবে ওই ব্যক্তিকে শর্ত দেওয়া হয়— কর্মসূচির সময় কাউকে আঘাত বা সহিংস কোনো ঘটনা ঘটানো যাবে না।
অনুমতি পেয়ে ইসরায়েল দূতাবাসের সামনে হাজির হয়ে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো থেকে বিরত থেকে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন আহমাদ আলুশ নামে ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমি কখনোই কোনো ধর্মগ্রন্থ পোড়াবো না। ইসলাম আমাকে এ শিক্ষা দেয় না। আর সত্যি বলতে, তাওরাত ও বাইবেল পোড়ানোর কেনো ইচ্ছাই আমার ছিল না। আমি শুধু আমার ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদস্বরূপ এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছি।