জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের কক্ষের দরজা ভেঙে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করেছেন অপর পক্ষের কর্মীরা। বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে যাওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। আহত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম তাওহিদ আহমেদ। তার মাথায় দুটি সেলাই দিতে হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু হলের ৪১৬ নম্বর কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা কক্ষের দরজা ভেঙে প্রবেশ করেন। আহত তাওহিদ আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের একজন কর্মী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জল কুমার প্রধান গণমাধ্যমকে বলেন, আহত অবস্থায় তাওহিদকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মাথায় দুটি সেলাই করা হয়েছে। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় আবারও ক্যাম্পাসে ফিরে যান তাওহিদ। ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনার নেপথ্যে কারণ হিসেবে ছাত্রলীগের একটি সূত্রের ভাষ্য, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক বছরের মেয়াদের কমিটির মেয়াদ ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেই। এতে অন্তর্কোন্দল দেখা দেয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির পদপ্রত্যাশী কর্মীদের ভেতরে। তৈরি হয়েছে পৃথক আরেকটি পক্ষ। ক্যাম্পাসে এ নিয়ে সব সময়ই উত্তেজনাকর অবস্থা বিরাজ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, বিজয় দিবস উপলক্ষে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মসূচি ছিল। সকালে তাওহিদ আহমেদ বঙ্গবন্ধু হলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য বলেন। এ সময় কমিটির বিপক্ষে অবস্থান করা ছাত্রলীগের কিছু কর্মীর সঙ্গে তাওহিদের কথা–কাটাকাটি হয়। পরবর্তী সময়ে জুমার নামাজ চলার সময় তাওহিদ ৪১৬ নম্বর কক্ষে একা ছিলেন। ওই সময় ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী তাওহিদের ওপর হামলা করেন।
এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, তাওহিদ কক্ষে একা ছিলেন। হামলাকারী প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা করতে এলে তিনি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে তারা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে রামদা দিয়ে কোপান। এতে তাওহিদের প্রচুর রক্তপাত হয়। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর দীর্ঘ সময় তাওহিদ মেঝেতে পড়ে ছিলেন। একপর্যায়ের রক্তে মেঝে ভেসে যায়।
শুক্রবার দুপুরে ওই সময় জুমার নামাজ চলার কারণে হলের আশপাশের কক্ষগুলোয় কেউ ছিলেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলার কারণে তাওহিদকে কিছু জুনিয়র কর্মী মারধর করেছে। কেন মারধর করেছেন, সেটি জানা যায়নি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি করেছে।
বিজয় দিবসে এমন ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীর।