জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরসহ পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রোববার (২৩ মার্চ) এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স থেকে পাঠানো এক চিঠির সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। চিঠিটি দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে তাদের একক বা যৌথ নামে অথবা মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে যেকোনো মেয়াদি আমানত হিসাব (এফডিআর ও এসটিডি হিসাবসহ যেকোনো ধরনের বা নামের মেয়াদি আমানত হিসাব) ছাড়াও সঞ্চয়ী ও চলতি হিসাবসহ সব ধরনের হিসাব, লকার বা ভল্ট, ঋণ হিসাব ইত্যাদি থাকলে চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে ওইসব হিসাবের ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে হালনাগাদ তথ্য পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়, উপযুক্ত কারণ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্যাবলী সরবরাহ করা না হলে এবং উপর্যুক্ত চাহিদা মোতাবেক তথ্য সরবরাহে অস্বীকৃতি বা ব্যর্থতার ক্ষেত্রে আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী এককালীন ৫০ হাজার টাকা এবং পরবর্তীতে প্রতিদিনের জন্য ৫০০ টাকা হারে জরিমানা আরোপ করা হবে।
এদিকে অপর একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শরীফা কাদেরের নামে যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (লিমিটেড কোম্পানি ব্যতীত) বিভিন্ন শাখায় পরিচালিত সব হিসাবের অর্থ উত্তোলন বা স্থানান্তর স্থগিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
স্থগিতাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করে এ সংক্রান্ত একটি পরিপালন প্রতিবেদন (হিসাবগুলোর সর্বশেষ স্থিতি উল্লেখসহ) জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
এর আগে গত ২০ মার্চ চাঁদাবাজি, মনোনয়ন বাণিজ্য ও দলীয় ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আওয়ামী লীগ টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের ক্ষমতার ভাগিদার ছিল জাতীয় পার্টি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে প্রথমে জাতীয় পার্টিকে সংলাপসহ সরকারি বিভিন্ন প্রোগ্রামে ডাকা হলেও পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের ‘স্বৈরাচারের দোসর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। পরে আর জাতীয় পার্টিকে কোনো সংলাপে ডাকা হয়নি। আওয়ামী লীগের পরই দলটি বর্তমানে রাজনীতিতে কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে।