রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ড. ইউনূস সরে গেলে ফের রেমিট্যান্স বন্ধের হুঁশিয়ারি প্রবাসীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
-বিজ্ঞাপণ-spot_img

দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই নতুন করে আলোচনায় এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি তার পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উদ্বেগে পড়েছেন বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা। অনেকেই বলছেন, ড. ইউনূস যদি পদত্যাগ করেন, তাহলে তারা আবারও রেমিট্যান্স শাটডাউন বা বৈধ পথে টাকা পাঠানো বন্ধের পদক্ষেপ নিতে পারেন।

এর আগে, গত বছরের জুলাই মাসে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সময়ও একইভাবে রেমিট্যান্স বন্ধ করেছিলেন প্রবাসীরা। এর প্রভাব পড়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। ওই সময় মাত্র ১০ দিনের রেমিট্যান্স শাটডাউনে বৈধ পথে প্রবাসী আয় কমে দাঁড়িয়েছিল ১.৯৫ বিলিয়ন ডলারে। তবে সরকারের পরিবর্তনের পর আবারও বাড়তে শুরু করে রেমিট্যান্স। মার্চ মাসে রেকর্ড ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।

প্রবাসীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর তারা আস্থা ফিরে পেয়েছেন। তিনি শুধু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নয়, প্রবাসীদের স্বার্থেও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবাসী ও তাদের স্বজনদের জন্য দুটি ওয়েটিং লাউঞ্জ চালু অন্যতম। এছাড়া আরব আমিরাতে গ্রেপ্তার হওয়া প্রবাসী আন্দোলনকারীদের মুক্ত করতেও ভূমিকা রাখেন তিনি।

প্রবাসীদের মতে, ড. ইউনূস এখন কেবল একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদই নন, বরং একজন বিশ্বাসযোগ্য নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তারা চান, আগামী নির্বাচন তার নেতৃত্বেই হোক।

প্রবাসী সংগঠনের নেতারা বলছেন, ড. ইউনূস সরে গেলে তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হবে। বিশেষ করে যারা তার নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকায় বসবাসরত অনেক বাংলাদেশিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেমিট্যান্স শাটডাউনের ডাক দিচ্ছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত এক প্রবাসী বলেন, ড. ইউনূস চলে গেলে আমরা আর বৈধ পথে টাকা পাঠাবো না। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, তিনি না থাকলে দেশে আবার পুরনো অবস্থা ফিরে আসবে।

অস্ট্রেলিয়ার আরেকজন বলেন, ৯৫ শতাংশ প্রবাসী ইউনূসকে সমর্থন করে। তার বিকল্প নেই। তার মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব।

অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির জন্য রক্তসঞ্চালনের মতো। এটা বন্ধ হলে রিজার্ভে বড় ধাক্কা লাগবে। চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের গবেষক এম হেলাল আহমেদ জনি বলেন, এই সংকটকালে জাতীয় ঐক্য দরকার। রেমিট্যান্স বন্ধ হলে অর্থনীতি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে। আজ সন্ধ্যায় বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে সরকারপ্রধানের। তবে প্রবাসীরা পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছেন—ড. ইউনূসকে সরে যেতে দেওয়া যাবে না।

শেয়ার করুন

সর্বশেষ নিউজ

৪-৫ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা

আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় ১৪...

ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে, ভৈরবকে জেলা ঘোষণার প্রতিশ্রুতি হাসনাতের

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, "জুলাই আন্দোলনে এক ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছি—নতুন কোনো ফ্যাসিস্টকে ক্ষমতায় আনার জন্য নয়"এনসিপির এই...

“আবু সাঈদ নয়, জুলাইয়ের প্রথম শহীদ ছাত্রদলের ওয়াসিম”

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন দাবি করেছেন, জুলাইয়ে গণআন্দোলনের প্রথম শহীদ ছাত্রদলকর্মী ওয়াসিম আকরাম। তিনি বলেন, সময়ের হিসাবে আবু সাইদের আগে গুলিবিদ্ধ...

নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হলেই নানা ষড়যন্ত্র সামনে আসছে: প্রধান উপদেষ্টা

পতিত শক্তি গণ্ডগোল লাগিয়ে নির্বাচনের আয়োজনকে ভণ্ডুল করার অপচেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাই এই অপচেষ্টাকে প্রতিহত করতে ফ‍্যাসিবাদবিরোধী...

সম্পর্কিত নিউজ

৪-৫ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা

আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা...

ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে, ভৈরবকে জেলা ঘোষণার প্রতিশ্রুতি হাসনাতের

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, "জুলাই আন্দোলনে এক...

“আবু সাঈদ নয়, জুলাইয়ের প্রথম শহীদ ছাত্রদলের ওয়াসিম”

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন দাবি করেছেন, জুলাইয়ে গণআন্দোলনের প্রথম শহীদ ছাত্রদলকর্মী...