ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছয়টি অনুষদের আওতায় ২৫টি বিভাগ রয়েছে। অথচ বিভাগগুলোর জন্য ক্লাসরুম রয়েছে মাত্র ৩৬টি। ফলে প্রায়ই সব বিভাগের ব্যাচগুলোকে শ্রেণিকক্ষ ভাগাভাগি করতে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ছয়টি অনুষদের আওতায় ২৫টি বিভাগের জন্য পাঁচতলাবিশিষ্ট একটি ভবনের দুটি ব্লককে অ্যাকাডেমিক ভবন-১ ও অ্যাকাডেমিক ভবন-২ নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্লাসরুম ৩৬টি ও ল্যাব রয়েছে ৩১টি। এর মধ্যে সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের আওতাধীন অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, লোকপ্রশাসন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জন্য একটি করে ক্লাসরুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে যাত্রা শুরু করা সমাজকর্ম বিভাগের নেই কোনো ক্লাসরুম।
কলা ও মানবিক অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ইংরেজি ও ইতিহাস বিভাগের জন্য একটি করে ক্লাসরুম। বাংলা বিভাগের জন্য দুটি ক্লাসরুম বরাদ্দ থাকলেও তার একটি আবার ভাগাভাগি করতে হয় আইন বিভাগের সঙ্গে। এ অনুষদে দর্শন বিভাগের জন্য কোনো ক্লাসরুম নেই। বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের জন্য দুটি ক্লাসরুম বরাদ্দ থাকলেও মার্কেটিং বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগগুলোর জন্য বরাদ্দ একটি করে ক্লাসরুম।
প্রশাসনিক ভবনে এ অনুষদের চারটি বিভাগের জন্য একটি যৌথকক্ষ আছে। বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের জন্য দুটি করে ক্লাসরুম ও ল্যাব আছে। রসায়ন বিভাগের জন্য দুটি ল্যাব থাকলেও ক্লাসরুম আছে একটি। পরিসংখ্যান বিভাগের জন্য আছে একটি করে ক্লাসরুম ও ল্যাব।
এ অনুষদের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্য শুধু ছয়টি ল্যাব আছে। আলাদা কোনো ক্লাসরুম নেই। এ ছাড়া জীববিজ্ঞান অনুষদের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ক্লাসরুম দুটি, ল্যাব তিনটি, মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের দুটি ক্লাসরুম এবং কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একটি ক্লাসরুম ও একটি ল্যাব আছে।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বি খান বলেন, ক্লাসরুম সংকটের কারণে শিক্ষকরা সিলেবাস শেষ করার জন্য যথেষ্ট সময় পান না। যে কারণে সময়মতো পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয় না।
শুধুমাত্র শ্রেণিকক্ষই নয়, সংকট আছে অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনীয় পৃথক কক্ষেরও। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের জন্যও আলাদা কক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষকের কেউই পাননি আলাদা কক্ষও। তাদেরও এক কক্ষে তিন থেকে চারজন ভাগাভাগি করে বসছেন।
গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ক্লাসরুম সংকটের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করছি। ক্লাসরুম সংকট তো একদিনে শেষ হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় বড় হচ্ছে, বিভাগ বাড়ছে। সরকার থেকে বড় ধরনের বরাদ্দ না পেলে এত তাড়াতাড়ি এ সমস্যা শেষ হচ্ছে না।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, শিডিউল অনুযায়ী ক্লাস নিলে ক্লাসরুম সংকটে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু শিডিউল মিস করলে ব্যাকআপ ক্লাস নিতে সমস্যা হয়।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে গেছে। বিষয়গুলো ভিসিকে অবগত করা হয়েছে।