বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য (ভিসি) ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণের দাবিতে আগামীকাল (মঙ্গলবার) দক্ষিণবঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচির ডাক দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সোমবার দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ডফ্লোরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংহতি সমাবেশ থেকে থেকে এই ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা আসে। এদিন সমাবেশ শেষে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে একটি বিক্ষোভ মিছিলের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচি হয়।
বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আজ ২৮তম দিনে ব্লকেড কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন অভিযোগ করে বলেন, বারবার রাষ্ট্রপক্ষকে জানানোর পরেও কোনো সাড়া মেলেনি। যদি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হয়, তার জন্য কর্তৃপক্ষই দায়ী থাকবে। আগামীকাল দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে যদি উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে অপসারণ করা না হয়, তবে তারা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেবেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, “আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন মেনে নিয়ে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেননি। আগামীকাল ২টার মধ্যে যদি উপাচার্য পদত্যাগ না করেন, তাহলে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।”
আরেক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, “আন্দোলনের ২৮তম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আগামীকাল থেকে ব্লকেড কর্মসূচিতে যাচ্ছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মুস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।”
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে কেউই ভালো নেই। এই ফ্যাসিস্ট মনোভাবের স্বৈরাচারী ভিসি যদি বহাল থাকেন, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে যাবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষার স্বার্থে আমরা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পাশে আছি।”
উল্লেখ্য, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ক্লাস বর্জন করেন। তবে পরীক্ষাসমূহ ও বিভিন্ন জরুরী সেবা চলমান ছিল।