বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তার ভূমিকা সামনে এনেছে। সংস্থাটি দাবি করেছে— গুমের ঘটনাগুলোর তদারকিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন।
এইচআরডব্লিউ’র সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা গুমের ঘটনায় অবগত ছিলেন এবং এর তদারকি করছিলেন। প্রতিবেদনে বিশেষভাবে মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে প্রকাশিত জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্তকারী জাতীয় কমিশনের প্রতিবেদনে ৩ হাজার ৫০০ এর বেশি গুমের ঘটনা উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গুমের শিকার ব্যক্তি মীর আহমাদ বিন কাসেম জানান, তাকে যে জায়গায় আটক করা হয়েছিল, তা ছিল অত্যন্ত নির্যাতনমূলক। সেখানে রাখা হওয়া বন্দিদের জন্য শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার ছিল এক ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি।
এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ভেঙে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ডে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে গুম, নির্যাতন বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে কোনো সদস্যকে দায়মুক্তি না দেওয়া হয়।
এইচআরডব্লিউয়ের মতে— বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ প্রবাহিত, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনকে সহজতর করে। তাই সরকারের উচিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে তদারকি ব্যবস্থা গড়ে তোলা।