জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দীর্ঘ ৯ বছর পর শাখা ছাত্রদলের ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি ঘোষিত এ কমিটিতে এতে পদায়ন করা হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জাবি শাখার ১৩ জন নেতাকর্মীকে পদায়নের অভিযোগ ওঠেছে।
ছাত্রলীগ থেকে শাখা ছাত্রদলে পদপ্রাপ্ত এসকল নেতাকর্মীর তথ্য প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
এই নেতাকর্মীদের হলেন- কমিটির ২৭ নং যুগ্ম- আহ্বায়ক রিফাত আকন্দ অন্তর, ১০ নং সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, ১১ নং সদস্য হারুনুর রশিদ, ১৬ নং সদস্য সাদিকুল ইসলাম শুভ, ১৮ নং সদস্য রায়হান পারভেজ , ২৮ নং সদস্য জোবায়ের হাসান রিফাত, ২৯ নং সদস্য গোলাম রব্বানী অর্নব (ফুচকার দোকানে চাঁদাবাজির দায়ে সদ্য বহিষ্কৃত), ৪৮ নং সদস্য রিহাব হোসেন, ৭৩ নং সদস্য খন্দকার সাকিব আঞ্জুম শারফি, ৭৭ নং সদস্য এস এম শাহরিয়ার হামজা শ্রেষ্ঠ, ১০৩ নং সদস্য নাসির উদ্দীন মিয়া এবং সদস্য রবিন রহমান।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, এদের মধ্যে রিফাত আকন্দ অন্তর- ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও তার ছোট ভাই জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তালিকায় ১ নম্বর আসামী আরমান খান যুব এর বোনের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। মোস্তাফিজুর রহমান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তি করে পোস্ট করেছিলেন। হারুনুর রশিদ শাখা ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন। সাদিকুল ইসলাম শুভ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের ব্লকে ছিলেন এবং শিক্ষার্থী নির্যাতনের সাথে জড়িত। রায়হান পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে ক্যান্টিনে বাকি খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জোবায়ের হাসান রিফাতকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনকে ফুল দিয়ে বরণ করতে দেখা যায়। গোলাম রব্বানী অর্নবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ফুচকার দোকানে চাঁদা দাবির অভিযোগে তাকে বহিস্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। রিহাব হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক- জব্বার হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন। খন্দকার সাকিব আঞ্জুম শারফি, এস এম শাহরিয়ার হামজা শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন এবং সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জাড়িত ছিলেন। ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বাকি খাওয়ার অভিযোগ আছে। এছাড়া রবিন রহমান সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করতেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ১৭৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনেককেই আমি চিনি না। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা কমিটিতে এসেছে। তবে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিল এরকম কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পেলে আমরা তাকে কমিটি থেকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নিব।