শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আগেই শুরু হয়েছে কৃতিত্ব নিয়ে বিতর্ক। জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস ও নেতৃত্ব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে চলছে তর্ক-বিতর্ক। মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড পেজে লেখেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। তার সুরে সুর মিলিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদও আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরেন। অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্যামেরার সামনে থাকলেই আন্দোলন করা যায় না, বরং বাস্তব মাঠপর্যায়ে সক্রিয়তার গুরুত্ব বেশি।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন মনে করেন, অভ্যুত্থান যদি কোনো নির্দিষ্ট দল বা আদর্শ দ্বারা সংগঠিত হতো, তাহলে সংশ্লিষ্টরা সে দলের সঙ্গেই থাকতেন। কিন্তু নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চিন্তা থেকেই বোঝা যায়, বিদ্যমান আদর্শ বা সংগঠনগুলোর সঙ্গে আর একসঙ্গে চলা সম্ভব হচ্ছে না।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “এই অভ্যুত্থানে কোনো একক ব্যক্তি মাস্টারমাইন্ড ছিলেন না। কারো একক কৃতিত্বও নেই। সবাই মিলে আন্দোলন সফল করেছেন, তাই সবাইকেই কৃতিত্ব দিতে হবে। আমরা চাই, সঠিক ইতিহাস উঠে আসুক, বিকৃত না হোক। তবে দুঃখজনকভাবে অতীতের মতো এবারও ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ রুশাদ ফরিদী মনে করেন, কৃতিত্ব নেওয়ার প্রতিযোগিতায় এখন কিছু নেতা নিজেদের অতীত ভূমিকা নিয়ে নতুন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তবে সব পক্ষই এক বিষয়ে একমত— ২০২৪ সালের আন্দোলনের ইতিহাস যেন বিকৃত না হয়।
তবে অনেকে বলছেন– শেখ হাসিনা পালানোর পর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম আব্দুল কাদের পুরো আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের ভূমিকা তুলে ধরেছেন। তাহলে এখন বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্কের কিছু নেই। বরং, এখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গড়ার সময়। সবাই যেন সেদিকে মনযোগী হয়।