রাজধানীর পল্টন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ ছাড়াও আজ আরও ১২টি দলের কর্মসূচি রয়েছে। এসব কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দলের কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা নাশকতার আশঙ্কা নেই। তবে সার্বিক প্রস্তুতি পুলিশের রয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এদিকে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গাবতলী, আমিনবাজার, সাভার, আশুলিয়া এলাকায় পুলিশের তল্লাশি ও আটকের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে এ তল্লাশি শুরু করে ঢাকা জেলা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ।
তবে যানবাহনে তল্লাশি ও আটকের অভিযোগ অস্বীকার করে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়। আমাদের সংশ্লিষ্ট থানার ওসি গাবতলীতে আছেন। তিনি জানিয়েছেন এ ধরনের কোনো ঘটনা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটেনি।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ ঢাকায় বড় দুটি দলের সমাবেশ রয়েছে। আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে, নাশকতামূলক কার্যক্রম হতে পারে। সে কারণে আমরা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ কারণে আমরা সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আমরা তল্লাশি করছি। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আমাদের এই ব্যবস্থা।
সাভার ও আশুলিয়ার সড়ক-মহাসড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি করছে পুলিশ। এ সময় যাত্রীবাহী পরিবহণগুলোকে ঢাকায় প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। সাভারের আমিনবাজার এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে তল্লাশি চলাকালে সড়কের ঢাকামুখী লেনে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তারা অভিযোগ করে বলছেন, দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত তাদের আটকে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
পুলিশ বলছে, এটা নিয়মিত তল্লাশির অংশ। তবে বাসের যাত্রী ও চালকেরা বলছেন, গত এক মাসেও আমিনবাজার ও গাবতলী এলাকায় এ ধরনের কোনো তল্লাশি দেখেননি তারা। বাসের চালকদের অভিযোগ, ‘গত এক-দুই মাসে এ ধরনের তল্লাশি হয়নি। তিন ঘণ্টা ধরে বসে আছি। গ্যাস খরচ হচ্ছে, যাত্রীদের কষ্ট হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, রাজধানীর পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ২৩ শর্তে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একই শর্তে শান্তি সমাবেশের জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগকেও অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। শুধু সময় ও স্থান আলাদা। বিকেল তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।
দুপুরে পল্টন ও বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। সাজিয়ে রাখা হয়েছে জলকামান, এপিসি। দেখা গেছে সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।