শেরপুর সদর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে এক বিএনপি নেতার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ৪৭ বছর বয়সী জাকারিয়া বাদল মারা যান।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শেরপুর সদর থানার ওসি মো. জুবায়দুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জাকারিয়া বাদল শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহকারী সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মঙ্গলবার বিকালে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ এলাকায় মাদ্রাসার সামনে তার ওপর হামলা হয়। হামলায় বাদলসহ আরও দুইজন আহত হন। অন্য দুইজন হলেন সোহাগ আলম (৩৫) ও রুহুল (২৮)। সোহাগের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাকারিয়া বাদলের স্বজন ও ছাত্রদল কর্মী রমজান আলী জানিয়েছেন, জাকারিয়া বাদলের কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছিল। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উভয়ের সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে ওঠে। তাছাড়া, নুরে আলম নামক এক কৃষকলীগ নেতার সঙ্গেও বাদলের রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। সম্প্রতি শেরপুর জেলা কারাগারে থাকা নূরে আলমের সঙ্গে লুৎফর রহমান সাক্ষাত করেন এবং বাদলকে দমন করতে একসঙ্গে পরিকল্পনা করেন।
রমজান আলী আরও জানান, মঙ্গলবার বিকালে বাদল ও তার সঙ্গীরা ভীমগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নূরে আলম ও লুৎফরের অনুসারীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তিনজনকে আহত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে বাদল ও সোহাগের অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাদলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
শেরপুর সদর থানার ওসি মো. জুবায়দুল আলম জানিয়েছেন, বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং সেখানে যৌথবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ হামলাকারীদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। নিহতের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। লাশ শেরপুরে আসার পর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর মামলার কার্যক্রম শুরু হবে।