ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয় মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বরং ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ।
সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কে-৮০ ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের কাজ নয়, আমাদের কাজ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ জনগণকে অবহিত করা।
তিনি বলেন, মানুষের জ্বর বিভিন্ন কারণে হতে পারে, আমরা বলেছি জ্বর হলে দ্রুত পরীক্ষা করাতে। আপনারা জানেন আমরা সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি ৫০ টাকা করে দিয়েছি। আমরা দেখছি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের মূল কথা হলো ডেঙ্গু মশা কমাতে হবে, তাহলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমে যাবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শুধু বর্ষা মৌসুমে নয়, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন পৌরসভায় মশা নিধনের কাজটি সারা বছর করতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গবেষণা আবশ্যক হয়ে পড়েছে এবং এ নিয়ে সরকার কাজ করছে। আমরা গবেষণার মধ্যে দিয়ে কীটনাশক, চিকিৎসা এমনকি চিকিৎসা পদ্ধতি পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছি। যেসব দেশ ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে সফলতা অর্জন করেছে তাদের থেকে পরামর্শ নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
তিনি বলেন, শুধু সরকারকে দোষারোপ করলে চলবে না। নিজের বাড়ির আঙিনা নিজেকেই পরিষ্কার রাখতে হবে। সিটি করপোরেশন এগুলো পরিষ্কার করে দেবে না।
অ্যাম্বুলেন্স মালিকদের ধর্মঘট বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন কী কারণে তারা ধর্মঘট ডেকেছে সে বিষয়টি আমার জানা নেই, তাই আমি ভালো কিছু বলতে পারব না। তবে দেশে একটি সমস্যা চলছে, দিনদিন ডেঙ্গু রোগীর সংক্রমণ বাড়ছে। তাই এখন ধর্মঘটের সময় নয়। মানুষের সেবা প্রয়োজন, চিকিৎসা প্রয়োজন। তাদের ধর্মঘট আমি মানতে পারছি না। তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
মেডিকেলে পড়ালেখা করে ইদানিং অনেকে বিসিএস দিয়ে প্রশাসন বা পুলিশ ক্যাডারে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারি মেডিকেলে একজন শিক্ষার্থীকে এমবিবিএস সম্পন্ন করাতে সরকারের কোটি টাকার বেশি খরচ হয়। এগুলো জনগণের করের টাকা। ভবিষ্যতে তারা চিকিৎসক হয়ে জনগণের চিকিৎসা দেবেন। কিন্তু তারা সেটা না করে বিসিএস দিয়ে পুলিশ বা প্রশাসন ক্যাডারে চলে গেলে জনগণের কোটি কোটি টাকার অপচয় হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে নাজমুল হক প্রমুখ।