৬০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ইসরায়েল মুক্তি দেওয়ার কিছু পরেই চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মরদেহগুলো হস্তান্তর করে হামাস।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, চারজন জিম্মির মরদেহবাহী কফিন তারা পেয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মরদেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রামাল্লা থেকে এএফপির সাংবাদিকেরা জানান, তারা ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি কারাবন্দির দলকে বাস থেকে নেমে যেতে দেখেছেন। সম্ভবত তাদের গত সপ্তাহে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। জিম্মিদের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক আচরণের’ অভিযোগে ইসরায়েল তাদের মুক্তি স্থগিত করেছিল।
মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। তাদের অনেকে বন্ধু বা স্বজনেরা কাঁধে চড়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। অনেক নারীকে আনন্দে কাঁদতে দেখা যায়।
ইসরায়েলের কাছে হামাস যে চারজন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে তারা হলেন— ওহাদ ইয়াহালোমি, সাচি ইদান, ইতজিক এলগারাত ও সোলোমো মনসুর। ইসরায়েলি গণমাধ্যম তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। তাদের সঙ্গে চার জিম্মির মৃতদেহও হস্তান্তর করে। বিনিময়ে ৬২০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। কিন্তু মুক্তি দেওয়ার সময় হামাস জিম্মিদের সঙ্গে ‘অসম্মানজনক আচরণ’ করছে অভিযোগ তুলে বন্দীদের মুক্তি স্থগিত করে ইসরায়েল।
হামাসের পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ জানিয়ে সেদিন জানানো হয়, আগে ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই কেবল গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করবে হামাস।
এই জিম্মি ও বন্দিবিনিময়ের মধ্য দিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হতে যাচ্ছে। এখন দুই পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো।
গাজা যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য ইসরায়েলের প্রতিনিধিদল রওনা দিয়েছে।
স্টিভ উইটকফ গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘(দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে) আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এ জন্য ইসরায়েল একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। এই প্রতিনিধিদল কাতারের রাজধানী দোহা নয়তো মিসরের রাজধানী কায়রোয় যাবে, যেখানে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে আবার আলোচনা শুরু হবে।’