সম্প্রতি গণমাধমে আলোচনা চলছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদ থেকে সৈয়দ জামিল আহমেদের সরে দাঁড়ানো নিয়ে। তার পদত্যাগ ইস্যু নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
গতকাল শনিবার (১ মার্চ) বেলা ১টা ১ মিনিটে সৈয়দ জামিল আহমেদ প্রসঙ্গে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন উপদেষ্টা ফারুকী। ওই স্ট্যাটাসে তিনি জানান, ভালো শিল্পী হওয়া আর আমলাতন্ত্রকে কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো দুইটা দুইরকম আর্ট।
এ দুই পরিস্থিতিতে ভারসাম্য রাখতে পারেননি জামিল। যে কারণে হতাশা থেকে কলিগদের বুলিং করে ‘নাটকীয়ভাবে’ পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বলে মনে করেন উপদেষ্টা ফারুকী।
ফেস দ্যা পিপল পাঠকদের জন্য এবার সংস্কৃতি উপদেষ্টার স্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল-
‘সৈয়দ জামিল আহমেদের কাজের একজন গুণমুগ্ধ আমি। সম্ভবত উনার কাজ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো পত্রিকায় ছাপা হওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত লেখাটা আমি লিখেছিলাম যায়যায় দিনের এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাগাজিন মৌচাকে ঢিলের জন্য। এর পরেও বাংলা-ইংরেজি অনেক কাগজে লিখেছি। এখনও আমি তাকে বাংলাদেশের থিয়েটারের সবচেয়ে মেধাবী নির্দেশক মনে করি। কয়দিন আগেও জামিল আহমেদের সামনেই একজন বিদেশী রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি উনাকে দিয়ে তাদের দেশে একটা থিয়েটার প্রোডাকশন করাতে।’
পাশাপাশি সরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে যে কম্পোজার লাগে, সেটার সাথে কোনো একটা থিয়েটার দলে নির্দেশনা দেয়ার টেম্পারামেন্ট এক না। আমার ফিল্ম ইউনিটে আমি যা করতে পারি, একটা সরকারী প্রতিষ্ঠানে আমি তা করতে পারি না।
শুধু এইটুকু আপাতত বলে রাখি উনার বলা অনেকগুলা কথা পুরো সত্য নয়, অনেকগুলা কথা ডাহা মিথ্যা, এবং কিছু কথা পরিস্থিতি ডিল না করতে পারাজনিত হতাশা থেকে বের হয়ে আসা বলে মনে হচ্ছে। আমার বিস্তারিত লেখা হয়তো উনাকে বিব্রত করতে পারে। কিন্তু আমাকে আপনি এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন যেখানে আমাকে বিব্রতকর হলেও সত্য বলতে হবে, জামিল ভাই।
পরিশেষে, আমি উনার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি। উনার সৃজনশীল কাজে যেকোনো ভাবে সহযোগিতা করতে পারলে মন্ত্রণালয় ধন্য হবে। আর আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার পরও তাঁর কোনো সাহায্যে আসলে আনন্দিত হবো, যদিও আমাদের দুইজনের কাজের ক্ষেত্র আলাদা।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মুনীর চৌধুরী জাতীয় নাট্যেৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় হঠাৎ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন সৈয়দ জামিল আহমেদ। পদত্যাগের কারণ হিসেবে শিল্পকলার কাজে ‘আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ ও দুনীর্তি’র অভিযোগ তোলেন তিনি।