এই রোজায় ভোররাতে ফোনের স্ক্রিনে একটা কল প্রতিনিয়তই আসে, সেই কলের ভাষ্য কেমন আছি পরিবার থেকে দূরে। মায়ের কন্ঠে সন্তানের অবস্থা নিয়ে জানার তীব্র ইচ্ছা। একজন নারী যে কি না মা পরিচয়ে তিনি প্রত্যেক সন্তানের কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম নারী।
এক প্রেমিকের কাছের নারী সে কেমন। কখনো প্রেম, কখনো বিরহ। আবার নারী হয় জীবনসঙ্গিনী
তাই হয়তো কবি বলেন-
‘নারী তুমি
পদ্মকলি রজনী-গন্ধা নাকি ফুটন্ত গোলাপ
তুমি শুধু প্ররাণের পিপাসা মিটানো প্রেমের মিষ্টি আলাপ
বকুলের মালা বেলীর সৌরভ কৃষ্ণ চূড়ার লাল
সূর্যমুখীর চেয়ে থাকা, শিল্পীর ছবি আঁকা, স্বপ্নের মহাকাল’
আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এই দিনে আমরা নারীদের পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে অবদান রাখা প্রত্যেক নারীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। এ বারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, নারী-পুরুষের সম-অধিকার নিশ্চিত করা, নারীর কাজের স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য উদযাপনের উদ্দেশ্যে নানা আয়োজনে বিশ্বব্যাপী দিনটি পালিত হবে।
নারীরা আজ আর চার দেয়ালের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নন। তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, রাজনীতি, ক্রীড়া, ব্যবসা, সাহিত্য—প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ রেখে চলেছেন। তবুও সমাজের কিছু চ্যালেঞ্জ এখনো নারীদের সমানভাবে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
নারী দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো—নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বৈষম্য দূরীকরণ, এবং তাদের প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা ও অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। আমাদের সমাজে এখনো কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য, নারীর নিরাপত্তাহীনতা ও সমান মজুরির অভাব রয়েছে। কিন্তু আশার কথা, ধীরে ধীরে এই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে।
নারীর ক্ষমতায়ন মানে শুধু কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নয়, বরং তাদের মতামত, সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার এবং স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করাও জরুরি। পরিবার থেকে রাষ্ট্রপর্যায়ে নারীর সিদ্ধান্তমূলক অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। একমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূর করতে পারবো।
তাই এই নারী দিবসের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক—সমতা, মর্যাদা ও নিরাপত্তার ভিত্তিতে একটি উদার ও টেকসই সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে নারী-পুরুষ একসঙ্গে এগিয়ে যাবে, গড়বে সমতার বিশ্ব।