কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পবিত্র রমজান মাস জুড়ে বেলাশেষে ইফতার আয়োজনকে ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে এক বিশেষ আবহ তৈরি হয়েছে। প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে ইফতার করছেন, যা তাদের রমজানের সৌন্দর্য ও পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধের জায়গা দৃঢ় করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহিদ মিনার এবং আবাসিক হলগুলোর ছাদে নিয়মিত দেখা মিলে এমন দৃশ্যের। অনেকে নিয়ে আসেন রান্না করা খাবার আবার কেউ কেউ ক্যাম্পাসের আশেপাশের দোকানগুলো থেকেও কিনে আনেন খাবার। পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যাচভিত্তিক গ্রুপগুলোও ইফতারের আয়োজন করে থাকে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের জন্যেও ইফতারের ব্যবস্থা করেন, যা ক্যাম্পাসে মানবতার অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম জয় বলেন, “রমজান মাসে এই দৃশ্য খুবই হৃদয়গ্রাহী এবং সমাজের একতার এক সুন্দর উদাহরণ। যখন মানুষ একসঙ্গে ইফতার করে, সেটা শুধু খাবারের ভাগাভাগি নয়, বরং একে অপরের প্রতি সহানুভূতি, ভালোবাসা এবং সংহতির ও প্রকাশ ঘটায়।
অন্যদিকে, এই ধরনের আয়োজনগুলো আমাদের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতির অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। মানুষ একে অপরকে সাহায্য করার, একসঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করার মাধ্যমে, আমাদের সামাজিক দায়িত্বের প্রতি সচেতনতা বাড়ে। এছাড়াও, এটি একটি সুন্দর সুযোগ, যেখানে আমরা আমাদের পরিবেশে বা সমাজে অন্যদের পাশে দাঁড়ানোর প্রেরণা পাই।
তিনি আরও বলেন, ‘মাঝে মধ্যে অনেকে নিজেরা হাতে বানানো খাবার নিয়ে আসেন, আবার কিছু জায়গায় সংগঠন বা ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে একসাথে ইফতার আয়োজন করা হয়। এসব ইফতার অনুষ্ঠানে সবার মধ্যে এক ধরনের ঐক্য এবং পারস্পরিক সাহায্যের অনুভূতি তৈরি হয়। এই ধরনের আয়োজনে, শুধু খাবারের বিনিময়ে নয়, বরং ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও একতা প্রতিষ্ঠিত হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করা আমাদের জন্য বিশেষ অনুভূতির ব্যাপার। সবাই মিলে খাবার ভাগাভাগি করি, রমজানের এই মুহূর্তগুলো স্মরণীয় হয়ে থাকে। পরিবারের বাইরে রমজানের সময়টা একসাথে ইফতারের কারণে স্বস্তিদায়ক হয়ে উঠে।’
রমজানের এই ঐক্যবদ্ধ ইফতার আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধকে আরও সুদৃঢ় করছে এবং ক্যাম্পাসে এক সুন্দর সংস্কৃতির জন্ম দিচ্ছে।