মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫

গাজার পরিস্থিতি বর্ণনার জন্য বিশ্বের কাছে হয়তো শব্দ ফুরিয়ে যাচ্ছে: গুতেরেস

-বিজ্ঞাপণ-spot_img

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, দখলদার শক্তি ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনি দায়িত্বের ‘কোনোটিই’ পূরণ করছে না।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের বেশ কয়েকটি বিধান উত্থাপন করে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতাগুলো মনে করিয়ে মহাসচিব বলেন, গাজার পরিস্থিতি বর্ণনা করার জন্য বিশ্বের কাছে হয়তো শব্দ ফুরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা কখনই সত্য থেকে পালিয়ে যাব না।

গাজার জনগণের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ এবং জনস্বাস্থ্য পরিষেবা রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারার বিষয়ে তিনি বলেন, আজ এর কিছুই ঘটছে না। কোনো মানবিক সরবরাহ গাজায় প্রবেশ করতে পারবে না। ক্রসিং পয়েন্টগুলোতে খাদ্য, ওষুধ এবং আশ্রয়ের সরবরাহ স্তূপীকৃত হচ্ছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম আটকে আছে।

নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জাতিসংঘ প্রধান গাজার বর্তমান পরিস্থিতিকে আন্তর্জাতিক আইন এবং ইতিহাসের দৃষ্টিতে ‘সম্পূর্ণ অসহনীয়’ বলে বর্ণনা করেন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, অমানবিকীকরণ বন্ধ এবং শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরি পদক্ষেপ না নিলে পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি একই রকম সংকটে পরিণত হতে পারে।

গুতেরেস গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি এবং পূর্ণ মানবিক প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলে ত্রাণ প্রবেশের ফলে ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সংকট আরও তীব্রতর হয়েছে।

তিনি বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় এক ফোঁটাও সাহায্য আসেনি। খাবার নেই। জ্বালানি নেই। ওষুধ নেই। বাণিজ্যিক সরবরাহ নেই। সাহায্য ফুরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহতার দ্বার আবার খুলে গেছে।

গাজায় কিছু পৌঁছাতে হলে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ‘অনুমোদন ব্যবস্থা’ চালুর দিকে হাঁটছে ইসরায়েল।

এর নিন্দা করে তিনি বলেন, এটি কেবল শেষ ক্যালোরি এবং শেষ আটার দানা পর্যন্ত সাহায্য পৌঁছানোকে আরও নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মমভাবে সীমিত করার ঝুঁকি তৈরি করে। জাতিসংঘ এমন কোনো ব্যবস্থা মানবে না, যেটি মানবিক নীতিগুলোকে সম্পূর্ণরূপে সম্মান করে না : মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতা।

তিনি সতর্ক করে বলেন, গাজার পরিস্থিতি একটি হত্যাক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এবং খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহের ওপর অবরোধের ফলে বেসামরিক নাগরিকরা অন্তহীন মৃত্যুর চক্রে আটকা পড়েছে।

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার মাধ্যমে সবকিছু শেষ হয়ে গেল। গাজার ফিলিস্তিনি পরিবার এবং ইসরায়েলে জিম্মিদের পরিবারের আশা ডুবে গেল।

গুতেরেস বলেন, আমাদের অবশ্যই আমাদের মূল নীতিগুলিতে অটল থাকতে হবে। অমানবিকীকরণ বন্ধ করার, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার, জীবন রক্ষাকারী সহায়তা নিশ্চিত করার এবং যুদ্ধবিরতি পুনরায় শুরুর সময় এসেছে।

শেয়ার করুন

সর্বশেষ নিউজ

সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ, মুন্নী সাহাসহ ২০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলমান থাকায় নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাংবাদিক মুন্নী সাহাসহ ২০ জনের দেশত্যাগে...

১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পাবেন সরকারি কর্মচারীরা—প্রজ্ঞাপন জারি

সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা নয়, ঘোষণা করা হয়েছে বিশেষ সুবিধা। সরকারের ঘোষণা অনুসারে, ১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে বেতন গ্রেডভেদে গ্রেড–১ ও তদূর্ধ্ব...

যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে আবারও ব্যর্থ রাশিয়া- ইউক্রেন

রাশিয়া ও ইউক্রেনের দ্বিতীয় দফার সরাসরি শান্তি আলোচনা কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে আরও যুদ্ধবন্দি বিনিময় নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। মঙ্গলবার...

মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াল জান্তা সরকার

মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। ভয়াবহ ভূমিকম্পের ক্ষত এখনো কাটেনি। এবার সেনাবাহিনীর লক্ষ্য, চীন-সমর্থিত তেল ও গ্যাস পাইপলাইন রক্ষা করা। একদিকে...

সম্পর্কিত নিউজ

সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ, মুন্নী সাহাসহ ২০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলমান থাকায় নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সাবেক...

১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পাবেন সরকারি কর্মচারীরা—প্রজ্ঞাপন জারি

সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা নয়, ঘোষণা করা হয়েছে বিশেষ সুবিধা। সরকারের ঘোষণা অনুসারে,...

যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে আবারও ব্যর্থ রাশিয়া- ইউক্রেন

রাশিয়া ও ইউক্রেনের দ্বিতীয় দফার সরাসরি শান্তি আলোচনা কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে।...