যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার পটভূমিতে ওমানে অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক—যেখানে পারমাণবিক কর্মসূচি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে হয়েছে ‘শান্তিপূর্ণ, উৎপাদনশীল ও ইতিবাচক’ আলোচনা। গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) এই আলোচনা হয়, তবে এটি ছিল পরোক্ষ—ওমানের মধ্যস্থতায়। দুই পক্ষ সরাসরি মুখোমুখি না হয়ে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে বার্তা বিনিময়ের পথ বেছে নেয়।
আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল—ইরানের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমিত করা। আলোচনায় বন্দি বিনিময় ও কিছু সীমিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ও গুরুত্ব পেয়েছে। উভয় পক্ষই স্বল্পমেয়াদি একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে আগ্রহী বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্বাস আরাকচি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা একটি সম্ভাব্য রূপরেখার খুব কাছাকাছি পৌঁছেছি। যদি আগামী সপ্তাহে এ নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি, তবে তা হবে একটি বড় অগ্রগতি।’ তিনি আরও জানান, আলোচনা হয়েছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং তা ছিল ‘উৎপাদনশীল ও ইতিবাচক’।
আরাকচি জানান, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের পর এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের এমন আলোচনা হলো। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা শুধু আলোচনার জন্য আলোচনা করছি না, আমরা একটি যৌক্তিক সমঝোতায় পৌঁছাতে চাই।’
অন্যদিকে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফ, ওমানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনা এসক্রোগিমা এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচির মধ্যে এ আলোচনা হয়েছে ওমান সরকারের সক্রিয় সহযোগিতায়। যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আলোচনাটি অত্যন্ত জটিল প্রসঙ্গ নিয়ে হলেও, এটি ছিল পারস্পরিক বোঝাপড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।’
আগামী শনিবার পুনরায় আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। এর আগে, গত সোমবার ট্রাম্প হঠাৎ ঘোষণা দেন—যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান ওমানের মাটিতে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে। ওমান অতীতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সূত্র: রয়টার্স