খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েটে) ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এবং তাদের যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ৩টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, গোলাম রব্বানী, ইয়াশীরুল কবির সৌরভ, তানভীর মন্ডল, জাস্টিস ফর জুলাই ইবি শাখার আহ্বায়ক নাহিদ হাসান জোয়ার্দার সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, “৫ আগস্টের পরে কুয়েটে যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয় সেই ঘটনার প্রায় ৪ ঘন্টা পর পুলিশ আসে যেটা খুবই হতাশাজনক। তারপরে শিক্ষার্থীদের উপর যে সন্ত্রাসী হামলা হয় এখনো তার দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি হয়নি। যাদের ন্যূনতম যোগ্যতা নাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার তাদের অতিদ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়া যারাই শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলে তাদের নামেই মামলা করা হয়েছে। যারাই আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরই আবার বহিষ্কার করা হয়েছে। কোনোরকম তদন্ত না করেই গোপনে সিন্ডিকেট সভায় এমন উদ্দেশ্য প্রণোদিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অনতিবিলম্বে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ চাই।”
এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “কুয়েটের উপাচার্য যে ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে সেটা বিগত ১৭ বছরের পতিত স্বৈরাচার সরকারও করতে সাহস করেনি সেটা তিনি করেছেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সবসময় শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে যেটা করা উচিত ছিলো সেটা না করে কুয়েট উপাচার্য সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে, তারা নৈতিকার বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে। নৈতিকতার বিরুদ্ধে দাড়িয়ে একজন উপাচার্য নৈতিক চেয়ারে বসতে পারেন না। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা শুধু কুয়েট না সারাদেশে উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে তারা জুলাই গণ বিল্পবের মাধ্যমে আসেননি, তারা একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার জন্য এসেছে। অথচ জুলাই পরবর্তী সময়ে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুষম ন্যায্যতার বহিঃপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিলো। আপনারা যদি কারো প্ররোচনায় একে অপরের বিভাজনে লিপ্ত হোন তাহলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদেরকে কাম্পাস থেকে বের করে দিতে বাধ্য হবে। সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে যিনি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেন না তিনি কখনো উপাচার্য হিসেবে থাকতে পারেন না।’
এর আগে কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ। সংগঠনটি কুয়েট ভিসির অপসারণ ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে একে শিক্ষার্থীদের দমন-পীড়নের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছে।