গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় অবস্থিত ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড কারখানায় চলমান শ্রমিক অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। বকেয়া বেতন পরিশোধ, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কারখানার শ্রমিকরা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে ফু-ওয়াং ফুডস কারখানার মেইন গেটের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিয়া মামুন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন এখনও পরিশোধ করেননি। শুধু তাই নয়, তিনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও দাবি করেন শ্রমিকরা।
এক শ্রমিক জানান, “দুই মাসের বেতন পাইনি। বাসায় খাবার নাই। বাচ্চাদের স্কুলের বেতন দিতে পারছি না। খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।”
এক নারী শ্রমিক বলেন, “৮-৯ হাজার টাকা বেতনে সংসার চালানো কঠিন। তার ওপর দুই মাসের বেতন না পেয়ে এখন নিঃস্ব অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি।”
মানববন্ধন শেষে শ্রমিকরা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা বলেন, মিয়া মামুন অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত। তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
শ্রমিকরা জানান, রবিবার (২০ এপ্রিল) ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও কারখানার মহাব্যবস্থাপক আমির হোসেন আবারও প্রতারণা করেছেন। এর আগে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও জয়দেবপুর থানা পুলিশ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন। উত্তেজনার একপর্যায়ে মহাব্যবস্থাপক আমির হোসেনকে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর ৭ জন শ্রমিক ও ৫ জন স্টাফকে কারখানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এ নিয়ে ১৬ এপ্রিল থেকে টানা ৬ দিন ফু-ওয়াং ফুডস কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। সবশেষে ২০ এপ্রিল তারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায়ের আহ্বান জানান।
শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ করতে হবে এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাতের তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি দিতে হবে। এছাড়া ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।