স্বৈরাচার হাসিনার বিতর্কিত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি ফের পিছিয়ে গেল। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আগামী ৬ মে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি ও চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারকে ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ড দেয়। একইসঙ্গে ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২৫ বছর এবং ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। তখন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২, ৩, ৪ ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখে এবং ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়।
সেই সময় আসামিপক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন (প্রয়াত), আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম (প্রয়াত)।
এরপর ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। একই বছরের ১৯ জুলাই আজহার তার মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। এই ২৩ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
তবে এত প্রক্রিয়া, এত সময় আর একাধিক শুনানির পরও আজহারুল ইসলামের আপিলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার অর্থ, অন্তত আরও কিছুদিন তার মুক্তির স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল।
এই আলোচিত মামলার পরিণতি এখন আপাতত আটকে রয়েছে ৬ মে’র শুনানির অপেক্ষায়। বহু বছর ধরে চলা এই মামলার পরবর্তী ধাপ কী রূপ নেয়, আইনের শাসন কি তার চূড়ান্ত পরিণতিতে পৌঁছায়, নাকি আবারো শুরু হবে অপেক্ষার নতুন অধ্যায়?