জেলা প্রতিনিধি, নাটোর।
নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে তৎপর রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ফলে পদ্মা তীরবর্তী মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে।
জানা গেছে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দিনভর চর বিনোদপুরে একটি অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের আস্তানায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। সেখানে ছোট ছোট ঘর তৈরী করে বালু উত্তোলনকারীরা থাকার অস্থায়ী ঘর নির্মান করেছিলো। তবে অভিযানের খবর পেয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা ড্রেজার সরিয়ে আগেই পালিয়ে যায়। অবৈধ এই বালু মহল যাতে পুনরায় চালু হতে না পারে সেদিকে নজরদারী অব্যাহত রাখার ফলে অবৈধ বালু উত্তোলন শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনলো সেনাবাহিনী।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং চরের মাটি বিক্রির মহোৎসব চলেছে বছরের পর বছর। ফলে নদীর পাড় ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে এই অঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে এমন কার্যক্রম চললেও অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধে দৃশ্যমান কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে অবৈধ এই কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় স্বস্থি ফিরেছে চরাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে।
এছাড়া বিভিন্ন স্থানে এখনো দৃশ্যমান অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালুর পাহাড়। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলেই অস্ত্র হাতে তেড়ে আসতো সন্ত্রাসীরা। ফলে জমি থাকা সত্বেও চরে গিয়ে ফসল ফলাতে পারেনি কৃষকেরা। বালু ও মাটির বাণিজ্য কেন্দ্রীক অভ্যন্তরীণ বিবাদে পদ্মার চরে প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনাও ঘটতো। ক্ষতিগ্রস্থদের মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসুচির পরও স্থানীয় প্রশাসনও ছিল নির্বিকার।
চর জাজিরা গ্রামের প্রবীণ মতিন মিয়া জানান, আগে নৈরাজ্য চললেও এখন সেনাবাহিনীর তৎপরতায় গা ঢাকা দিয়েছে অবৈধ মাটি ও বালু উত্তোলনকারীরা। উত্তোলনকৃত কোটি কোটি টাকার বালু জব্দের পাশাপাশি চরাঞ্চলে সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহলে স্বস্থি ফিরেছে কৃষকদের মাঝে। নব উদ্যমে কৃষকেরা ফসল ফলাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি চরাঞ্চলের কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তাই এই অবৈধ কার্যক্রম পুনরায় যেন না হয় সেজন্য প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রাখার দাবি জানান তিনি।
এদিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বলছেন যে, তারা কোনোভাবেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেবেন না। আর নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন জানান, কোনোভাবেই আর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবে না। বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথবাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।