জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাধারণ আলেম সমাজের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রিদওয়ান হাসান মুহাম্মদ রিদওয়ান হাসান। আলেম সমাজের প্রত্যাশা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণের বিষয় অগ্রাধিকার না পাওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি পদত্যাগ করেন।
মঙ্গলবার(২৯ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি পদত্যাগের কথা উল্লেখ করেন।
রিদওয়ান হাসন তার পোস্টে লিখেছেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক, যেখানে সাধারণ আলেম সমাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব দৃঢ়তা নিয়ে সামনে এসেছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিনব পদ্ধতিতে ‘গাশত কর্মসূচি’র মাধ্যমে জনতার মনে জাগরণ সৃষ্টি করে আন্দোলনকে গণআন্দোলনে রূপ দিয়েছিল এবং বহু ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের মাধ্যমে বিজয়ের মাটি প্রস্তুত করেছিল। আমি সেই ইতিহাসের অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টির সূচনালগ্নে যুক্ত হতে পেরে গর্ববোধ করছি এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
তিনি লিখেছেন, ‘আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি, একটি বহুমতের, মূল্যবোধ নির্ভর ও ন্যায়ভিত্তিক রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে হলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবিকে শ্রদ্ধার সাথে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। বিশেষত, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ৮০ এর অধিক জীবন উৎসর্গকারী শহীদ আলেম-ওলামা ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টিও বহুমতের প্রত্যাশা ও সহাবস্থানের যে অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়েছিল, তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে লক্ষ্য করেছি, শহীদ আলেম ও শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশাগুলো এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণের মতো বিষয়গুলো এনসিপিতে প্রত্যাশিত অগ্রাধিকার পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘সুতরাং দেশের ইসলামপ্রিয় জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে আরও নিবিড়ভাবে প্রতিনিধিত্ব করার সংকল্প নিয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণের কথা বিবেচনা করে আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি। আমি ভবিষ্যতে জাতীয় নাগরিক পার্টির কল্যাণ ও সাফল্য কামনা করছি এবং দেশের সার্বিক কল্যাণে যে কোনো ইতিবাচক প্রয়াসে পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।
এনসিপির উত্তরণ ও কল্যাণের জন্য শুভকামনা জানান তিনি।