ফেনীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহফুজ ও সালমানের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ফেনী ২৫০শয্যা হাসপাতাল এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। হামলায় আহত সমন্বয়করা দাবি করেছেন এ ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সহ সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান নেতৃত্বে দিয়েছেন।
আহত ২জনই ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা জানান, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ফেনী শহরের ট্রাংক রোডে মশাল মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। কর্মসূচী শেষে সাবেক সমন্বয়ক মাহফুজ ও সালমান ফেনীর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তিকৃত এক রোগীকে দেখতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে হাসপাতালের ভেতরেই এক নারীকে উদ্দেশ্য করে উস্কানী দেয় জেলা ছাত্রদলের সদ্য বহিস্কৃত সহ সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান।
তাৎক্ষণিক সমন্বয়ক মাহফুজ ও সালমান অসংলগ্ন আচরণের প্রতিবাদ করলে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতা জিল্লুর নেতৃত্বে ১০/১৫ জন যুবক লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে সমন্বয়কদের উপর হামলা চালায়। এতে মাহফুজের মাথা, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ও রক্তাক্ত হয়। সালমানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম লাগে।
আহত সাবেক সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, ছাত্রদল নেতা জিল্লুরের নেতৃত্বে আমাদের উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলা হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুুতি নিচ্ছি। আমরা এর বিচার চাই।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, কয়েকদিন আগে হামলাকারী ছাত্রদল নেতা জিল্লুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর খবর প্রকাশের পর ওই সাংবাদিককে হত্যা হুমকি দিয়েছিল। এরপরও এই অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টা তার পক্ষে বিভিন্ন নেতাকে কথা বলতে দেখা গেছে। কি দৈব ক্ষমতা তার!ফেনীর প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এই ব্যাপারে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা দেখতে চাই। পুরোনো সহিংসতার সংস্কৃতি আমরা আর ফিরতে দিবো না। অবিলম্বে হামলাকারীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতাকে বারবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলার প্রস্তুুতি নিচ্ছেন। অভিযোগ হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল ফেনীর একটি স্থানীয় দৈনিকে জেলা ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী সরকারী কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে খবর প্রকাশিত হয়। এরপর জিল্লুর ওই পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদককে কল দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। এঘটনায় ওই সাংবাদিক ফেনী মডেল থানায় সাধারণ ডায়রী করেন। বিষয়টিকে বিএনপি ও ছাত্রদলের কতিপয় নেতাকর্মীরা অন্য দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করলে সাংবাদিকরা মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানায়।
সর্বশেষ চাঁদাবাজীর ঘটনা ও সাংবাদিককে হত্যার হুমকির ঘটনায় ৪ মে জিল্লুর রহমানের জেলা ছাত্রদলের পদ স্থগিত করা হয়।