নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সহ-সমন্বয়ক এবং বৈছাআ নোয়াখালী জেলার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সীমান্তকে সামাজিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসএসই (সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এক যৌথ বিবৃতিতে সীমান্তকে বয়কটের সিদ্ধান্ত জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্তের একাধিক অগ্রহণযোগ্য, অসম্মানজনক ও নারীবিদ্বেষমূলক আচরণের প্রতিবাদে তাঁকে সামাজিক ও একাডেমিকভাবে বয়কট করা হচ্ছে।
এতে বলা হয়, সীমান্ত ছাত্রীদের প্রতি অনভিপ্রেত বার্তা পাঠানো, অনলাইন ও সরাসরি কটূক্তি, অশালীন মন্তব্য এবং যৌন রসিকতাসহ বিভিন্ন অনৈতিক আচরণ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মেহেদী হাসান সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনভিপ্রেত বার্তা পাঠিয়ে বিরক্ত করে আসছিলেন।
তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীদের নিয়ে কটূক্তি ও স্লাটশেমিং জাতীয় মন্তব্য করতেন। ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যেও ছাত্রীদের উদ্দেশে অশালীন বক্তব্য ও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতেন তিনি। শুধু তাই নয়, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, সীমান্ত বিভাগের কয়েকজন সিনিয়রের কাছ থেকে অর্থ ধার নিয়ে তা সময়মতো ফেরত না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেন এবং বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে তাচ্ছিল্যপূর্ণ আচরণ করেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ‘কনফেশন’ পেইজে সহপাঠীদের নিয়ে যৌনতাবোধক ও অপমানজনক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠলে তা অস্বীকার না করে বরং উদ্ধতভাবে জবাব দেন তিনি। সুপার মার্কেট ও ক্যাম্পাস এলাকায়ও একাধিকবার ছাত্রীদের উদ্দেশে বেয়াদবি করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সীমান্তকে বয়কটের আওতায় শিক্ষার্থীরা তার সঙ্গে কোনো ক্লাস, গ্রুপ ও একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবে না এবং ক্যাম্পাসে তাকে এড়িয়ে চলবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, এটি কোনো ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্ত আজ থেকেই কার্যকর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান সীমান্ত বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি এমন কোনো কাজ করিনি। ফেসবুকে শব্দচয়নে ভুল হয়েছিল, তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। একজন সিনিয়রের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়েছিলাম, ফেরত দিতে দেরি হওয়ায় এটিকে আর্থিক প্রতারণা বলা হয়েছে। একটি কুচক্রী মহল আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে। আমি এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের (সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং) পরিচালক নিজাম উদ্দীন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখনো কিছু জানি না। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।’