প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে দাবি-দাওয়া নিয়ে আগানো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লংমার্চ পুলিশের বাধায় আটকে গেছে। রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অর্ধশত।
বুধবার (১৪ মে) আবাসন সমস্যার সমাধানসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে কর্মসূচি শুরু করলে দুপুরে মৎস্যভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড় এলেই তাদের বাধা দেয় পুলিশ।
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ ও মিছিলের ওপর সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ডিএমপি। এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে শুরু হয় পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ। প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড়ের সামনে বসে পড়েন।
শিক্ষার্থীরা জানান, পুলিশের হামলায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন ৫০ জন।
এর আগে, বেলা সাড়ে ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে রওয়ানা হন। পদযাত্রা প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেইট বাধার সম্মুখীন হয়। পরে মৎস্যভবনে ফের পুলিশের বাধা অতিক্রম করে যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন জবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে আসতেই অতর্কিত টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ৫০ জন আহত হন। টিয়ারগ্যাসে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন, এছাড়া ঢাকা ট্রিবিউন এর জবি প্রতিনিধি সোহান ফরাজি, দৈনিক সংবাদের জবি প্রতিনিধি মেহেদী।
পুলিশের প্রতিরোধের সময় আহত সাংবাদিক মাহতাব লিমন, মেহেদীসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখন থেকে যাওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, যমুনার সামনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখানে মিছিল-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো-
আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।