কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে ঐতিহ্যবাহী গাজীকালু–চম্পাবতী মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধ্যায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হন এবং প্রায় ৩০টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় শতাব্দী ধরে আয়োজিত হয়ে আসা এই মেলাকে ঘিরে সম্প্রতি জামায়াত নেতারা অশ্লীলতা ও জুয়ার অভিযোগ তুলে এর বিরোধিতা শুরু করেন। প্রশাসনের অনুমতি না থাকলেও বিএনপির সমর্থকরা মেলা আয়োজনের চেষ্টা করলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিকেল থেকেই এলাকায় টহল দিলেও সন্ধ্যায় শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জামায়াতপন্থী অনেকেই দোকানে হামলা চালান। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, লাঠি, রামদা, হাঁসুয়া নিয়ে হামলাকারীরা প্রায় ৩০টি দোকানে ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। চাটমোহরের ব্যবসায়ী আরজ আলী জানান, হামলায় তার দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আহত জামায়াত কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, কুদ্দুস প্রামাণিক, তুহিন হোসেনসহ ছয়জন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে, বিএনপির পক্ষে আহত হয়েছেন খোকসা কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান, শিক্ষক টিপু সুলতানসহ আরও পাঁচজন। তাদের কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। জামায়াত নেতারা মেলায় অশ্লীলতা ও জুয়ার প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করলেও, বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে-জামায়াতের শত শত কর্মী অতর্কিতে হামলা চালিয়ে দোকানপাট ভাঙচুর ও লুট করেছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ জানিয়েছেন, মেলার কোনো অনুমতি ছিল না। সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।