সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় হোটেল কর্মচারী হোসেন খাঁ ওরফে আরাফাত খাঁন (৩৫)-এর চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ডিবি।
রোববার (২৫ মে) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২২ মে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে ওই রাতে আর বাসায় ফেরেনি আরাফাত। পরদিন সকালে আরাফাতের স্ত্রী শাপলা খাতুন জানতে পারে আরাফাতের লাশ হাটিকুমরুল গোলচত্বরের রোডস এন্ড হাইওয়ের পরিত্যক্ত রেস্টহাউসের পেছনে পড়ে আছে। লাশের মুখমণ্ডল থেতলানোসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে ডিবি পুলিশ এবং ঘটনায় জড়িত রায়গঞ্জ থানার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া(বাইমোলা) গ্রামের আলম শেখের ছেলে মো.ফিরোজ (২১) ও সলঙ্গা থানার তারুটিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মোঃ সামছুল হকের মেয়ে মোছাঃ জুলেখা খাতুন (২১) কে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায়, ফিরোজ ও নিহত হোসেন খাঁ ওরফে আরাফাত খাঁন চোরচক্রের সদস্য। তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সময়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় চুরি করতো। একবার চুরির টাকা ভাগ করার সময় আরাফাত ফিরোজের কাছ থেকে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা নেয়। ফিরোজ বিভিন্ন সময় সেই পাওনা টাকা চাইলেও আরাফাত সে টাকা ফেরত দিত না।
গত ২২ মে আরাফাতের সাথে ফিরোজ আবারো পাবনা রোডের ভাঙা গেস্ট হাউজের পিছনে রাখা পাইপ চুরি করার পরিকল্পনা করে এবং দুই হাজার টাকার বিনিময়ে মোছা. জুলেখাকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব করে। জুলেখা সে প্রস্তাবে রাজি হয় এবং ২৩ মে রাত ১ টার দিকে জুলেখাকে নিয়ে আরাফাত ও ফিরোজসহ আরো ২ জন সলঙ্গা থানাধীন হাটিকুমরুল গোলচত্ত্বরের রোডস এন্ড হাইওয়ের পরিত্যাক্ত রেষ্টহাউজের বাউন্ডারী ওয়ালের পিছনে গেলে ফিরোজ পূর্বের পাওনা পাঁচ হাজার টাকা পুনরায় চাইলে আরাফাত ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরোজকে চর-থাপ্পড় মারে।
এতে ফিরোজ ক্ষিপ্ত হয়ে পাশে থাকা ইট দিয়ে আরাফাতের মাথায় আঘাত করে। ইটের আঘাতে আরাফাত মাটিতে পরে যায় এবং ফিরোজ আরাফাতের মুখে পরপর কয়েকটি আঘাত করে মুখমন্ডল থেতলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আরাফাত মারা যায়। এ সময় ফিরোজ ও জুলেখাসহ বাকী দুইজন দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা নিজেদের সম্পৃক্ততাসহ ঘটনার বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।