ঢাকার রাজপথে নতুন এক বিপদের নাম—সিংকহোল। মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর শংকর এলাকায় সাত মসজিদ রোডে আকস্মিকভাবে সৃষ্টি হয় এক বিশাল গর্ত, যা দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। গর্তটি এতটাই গভীর ছিল যে, আশপাশের মানুষ মুহূর্তেই বুঝে যান এটি সাধারণ রাস্তার ক্ষতি নয়। দ্রুতই যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় এলাকাটিতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই ঢাকার ইতিহাসে প্রথম নিশ্চিতভাবে শনাক্ত সিংকহোল। নগরের মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা দুর্বলতা, পুরনো ড্রেনেজ সিস্টেম আর অপরিকল্পিত উন্নয়নের ভয়াবহ চিত্র যেন উঠে এলো এই একটিমাত্র গর্তে।
সিংকহোল তখনই ঘটে যখন মাটির নিচে ফাঁপা জায়গা তৈরি হয়—এর পেছনে থাকতে পারে পানির পাইপ ফাটল, ড্রেনেজ লাইনের লিক, ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের পতন কিংবা পুরনো সেফটিক ট্যাংকের ধস। ধীরে ধীরে মাটি নরম হয়ে যায় এবং একসময় ওপরের সড়ক তা টিকিয়ে রাখতে না পেরে ধসে পড়ে।
এ ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ঢাকার অবকাঠামো কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। শুধু ফ্লাইওভার আর রাস্তা বানালেই হবে না, তার নিচের চিত্রও দেখতে হবে। পুরনো শহর এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ভূগর্ভস্থ স্ক্যান ও সংস্কার দরকার।
এই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও এটি বড় বিপদের ইঙ্গিত। তাই নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। পানি জমে থাকা বা ফাটলধরা রাস্তা দেখে অবহেলা নয়—সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। আর কর্তৃপক্ষের উচিত নিয়মিত ভূগর্ভ পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ চালানো।
সিংকহোল কেবল একটি গর্ত নয়—এ যেন শহরের গভীরে জমে থাকা অব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনে ঘটতে পারে আরও বড় বিপর্যয়।