বাংলাদেশ ফুটবলের দীর্ঘদিন পর নিজের ঘর জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরে আসা। ফেরার উপলক্ষটা রাঙাতে দরকার ছিল দারুণ এক জয়। জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই মিডফিল্ডারের কল্যাণে সেটাই পেয়েছে বাংলাদেশ।
হামজা চৌধুরী আর সোহেল রানার দুই গোল দিয়েছে দাপুটে এক জয়।
ঘরের মাঠে হামজা চৌধুরীর অভিষেক। ফাহামিদুল প্রথমবার জাতীয় দলের জার্সিতে। মাঝমাঠে জামাল ভূঁইয়া আর হামজা চৌধুরীর রসায়ন। বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তরা যেমনটা দেখতে চেয়েছিলেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বুঝি সেটাই পূরণ করেছেন।
বাংলাদেশের শুরুটাও ছিল দারুণ। রাইট উইং থেকে ভয় ধরানো আক্রমণ হলেও সেটার শেষ ভাল হয়নি। গোল পেতে অবশ্য খুব বেশি সময়ও লাগেনি বাংলাদেশের৷ ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ঘরের মাঠে হামজা চৌধুরীর অভিষেক। আগের ম্যাচটা খেলেছিলেন ভারতের মাঠে। সেই হিসেবে এ এক নতুন অভিষেক হামজার। আর সেটা রাঙাতে সময় নিলেন মোটে ৫ মিনিট।
যে জুটিতে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ সেই জামাল-হামজা জুটিই এনে দিল গোল। কর্নার থেকে জামাল ভূইয়ার মাপা শটে হেড করেন হামজা। লিড পায় বাংলাদেশ।
আজকের ম্যাচে অভিষেক হয়েছে ফাহমিদুল ইসলামের। তার গতির ঝড় দেখেছে ঢাকা স্টেডিয়ামের দর্শকরা। হামজা চৌধুরী আর ফাহামেদুল ইসলামের গতির কাছে ম্যাচের শুরু থেকেই কুপোকাত হয়ে পড়ে ভুটান। প্রায়ই ভুটানের রক্ষণভাগ ভেঙ্গে চুরমার হয়েছে। বাম প্রান্তে বারবার গতি দিয়ে পরাস্ত করছিলেন ভুটানের রক্ষণকে। অন্তত দুবার ভাল কাটব্যাক ছিল, যদিও সেটা গোলে পরিণত করা হয়নি। আবার ডানপ্রান্তে কাজেম শাহ কিংবা তাজউদ্দিনরাও ছিলেন উজ্জ্বল। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গোল আর পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। ১-০ ব্যবধান নিয়েই টানেলে ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধের তিন মিনিটে সোহেল রানা দুর্দান্ত গোল করেন। দূরপাল্লার শটে ভুটানের জালে বল পাঠান সিনিয়র এই ফুটবলার। বাংলাদেশ ২-০ লীড পায়। রাকিব হোসেন খানিকক্ষণ পর আরেকটি গোল মিস করেন। খালি বারপোস্টেও বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে গোল মিসের হতাশায় ডোবেন রাকিব। কাজেম এবং হামজাকে আগেই আগেই উঠিয়ে নিয়েছিলেন কোচ। ফাহামিদুলকেও একপর্যায়ে উঠিয়ে নেন ক্যাবরেরা। তবে মাঠ ছাড়ার আগেও দারুণ এক মাপা ক্রস ফেলেছিলেন বক্সে। তবে ভুটানি গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় সেখান থেকে গোল আসেনি।
ফাহামিদুল ইসলাম ওঠার পর খেলার গতি অবশ্য খানিক কমেছে। দুই গোল পাওয়ার পর বাংলাদেশ অনেকটাই নির্ভার হয়েই খেলেছে। তারমাঝেও ফয়সাল আহমেদ ফাহিম বা শেখ মোরসালিনরা চেষ্টা করেছিলেন ব্যবধান বাড়াতে।
ম্যাচের ইনজুরি সময়ে জিগমে নামগয়ালের শট একেবারে কাছ থেকে দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক মিতুল মারমা। পুরো ম্যাচে খুব একটা পরীক্ষা দিতে না হলেও শেষের এই সেইভে দলের ত্রাতা হয়েছেন মিতুল।