পবিত্র ঈদুল আজহা’র ছুটি কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে পরে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা গেছেন। তবে সড়ক দুর্ঘটনার পরবর্তী সময়ে তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগও উঠেছে।
গত সোমবার (১৬ জুন) সকাল সাতটার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে জানা যায়। ঈদের ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে কুষ্টিয়া সদরের বিত্তিপাড়া এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে রাশেদ-সহ আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
পরে আহত অবস্থায় রাশেদকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু এসময় চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে চরম অবহেলা ছিল বলে অভিযোগ তোলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার পর রাশেদকে হাসপাতালে পৌঁছাতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লেগে যায়। তার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর দায়িত্বরত চিকিৎসক শুধু পালস পরীক্ষা করেই থেমে যান। রক্তপাত বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেননি, এমনকি রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়নি। রোগীকে বাইরে বেডে শুইয়ে রাখা হয়। চোখ-মুখ সাদা হয়ে গিয়েছিল, তবু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ এসেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হোসেন ইমাম বলেন, “চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়েছে কিনা তা এখনো স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান জানান, “ঘটনাটি সকালবেলায় ঘটে এবং আমি জানার সাথে সাথেই হাসপাতালে উপস্থিত হই। আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকেই চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।”
উল্লেখ্য, রাশেদুল ইসলামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলায়। তার পিতার নাম মো. সেলিম উদ্দিন। তার এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। সহপাঠী, শিক্ষক—কেউই এই অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না।