উভয়ের সম্মতি সাপেক্ষে তরুণ গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের সঙ্গে ধর্ষণ মামলার বাদী ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রি কাবিনামামূলে বিয়ে সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালত।
বুধবার (১৮ জুন) আদালতে নোবেলের আইনজীবী একটি আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের সম্মতি অনুযায়ী বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদালতের থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আবেদনে বলা হয়, মামলার আসামি নোবেল গত ২০ মে থেকে জেলহাজতে আটক আছেন। যেহেতু বাদী ও আসামির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হওয়ায় বাদী মামলাটি দায়ের করেছেন, মামলার বাদী ও আসামি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে ইচ্ছুক; সেহেতু জেলহাজতে আসামি ও বাদীর বিয়ের অনুমতি প্রদান করা একান্ত আবশ্যক। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ১৯ মে দিবাগত রাত ২টার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের বাসা থেকে নোবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থীকে বাসায় আটকে রেখে জোর করে ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর ডেমরা থানার করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরদিন নোবেলের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার নিম্ন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে অধ্যায়নরত ছিলেন মামলার বাদী। ২০১৮ সালে আসামি নোবেলের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচয় হয়। নোবেল বাদীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রায় কথাবার্তা বলতেন। একপর্যায়ে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর মোহাম্মদপুরে বাদীর সঙ্গে দেখা করে বাদীকে আসামি নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ডেমরা থানা এলাকায় নোবেলের নিজ বাসায় নিয়ে আসেন।
নোবেলের বাসায় আসার পর বাদী বাসা থেকে চলে যাওয়ার কথা বললে আসামির সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও ২ থেকে ৩ জন আসামির সহায়তায় বাদীকে বাসার একটি কক্ষে আটক করে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন। বাদী আসামির কথামতো তার বাসায় না থাকলে তার মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে মর্মে হুমকি দেন।
নোবেলের ভয়ে কাউকে তরুণী কোনোকিছু বলার সাহস পাননি। নোবেল তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও ২ থেকে ৩ জন বিবাদীর সহায়তায় বাদীকে সিঁড়ি দিয়ে চুলের মুটি ধরে টানা-হেঁচড়া করে অপর একটি কক্ষে আটক করে রাখেন। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বাদীর পিতা-মাতা বাদীকে চিনতে পারেন। তার পিতা-মাতা তাকে খোঁজাখুঁজি করা অবস্থায় গত ১৯ মে জাতীয় জরুরি সেবায় কল দেন।
এরপর ডেমরা থানা পুলিশের সহায়তায় ভুক্তভোগী বাদী আসামি নোবেলের বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে এবং নোবেল কারাগারে আটক রয়েছেন। এ অবস্থায় আদালতের নির্দেশে তার ও মামলার বাদীর মধ্যে বিবাহ কার্য সম্পাদনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।