রাষ্ট্রের মূলনীতি নির্ধারণে ’৭২ এর সংবিধানে থাকা চার নীতি পরিবর্তন চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে ছাড় দেওয়ার মনোভাব থাকার কথা জানিয়েছে দলটি। আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে আলাপ ছিল জোরেশোরে। তবে বিএনপি সহ ৩ দলের বিরোধিতায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা প্রায় স্থবির।
এমন অবস্থায় জাতীয় স্বার্থে নিজেদের অবস্থান থেকে খানিক সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে এনসিপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে একটা ঐকমত্য ছিল যে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদটা সীমিত করা প্রয়োজন। একজন ব্যক্তি দুইবার বা দুই মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী থাকা নিয়ে আলোচনা চলছিল। আরেকটি প্রস্তাব আসলো সর্বোচ্চ একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় কত বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন সেটা নির্ধারণ করলে হয়ত ভালো হবে।
তিনি বলেন, সবাই আলোচনায় করে অনেকেই একটা জায়গায় চলে আসে যে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। এনসিপির পক্ষ থেকে প্রস্তাব ছিল এক ব্যক্তি দুইবার প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নিতে পারবেন। যদি ঐকমত্যের স্বার্থে সবাই ১০ বছরের কথা বলে সেক্ষেত্রে সময় নির্ধারণের জন্য এনসিপি ফ্লেক্সিবল থাকবে।
তাসনিম জারা বলেন, পরে আলোচনায় আসলো যে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যদি সীমিত করতে হয় এর পাশাপাশি আপার হাউজ পিআর, এনসিসি এসব নিয়েও আলোচনা করতে হবে। তা না হলে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনেকটাই কমে যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের পজিশন হচ্ছে এনসিসি বা সাংবিধানিক পদগুলো নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা চাইব নির্বাচন কমিশনের মতো কোনো প্রতিষ্ঠান পক্ষপাতমূলক আচরণ করবে না। তাদের নিয়োগটা হবে একেবারে নিরেপক্ষভাবে।
রাষ্ট্রীয় মূলনীতির বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাব ছিল যে আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের যে মূলনীতি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। এর সঙ্গে গণতন্ত্রকে যুক্ত করে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। একইসঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের একটা সুপারিশ ছিল চারটি মূলনীতি যুক্ত থাকবে। সেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা মতানৈক্য দেখা গেল যে এটা ৭২ এর চারটি মূলনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকবে নাকি এটি বাদ দিয়ে যুক্ত থাকবে।
এনসিপির এ নেতা বলেন, আমাদের অবস্থানের ক্ষেত্রে স্পষ্ট– ৭২ এর মূলনীতি আমরা বাতিল চাই। বাকি মূলনীতির বিষয়ে আমরা উন্মুক্ত আছি। আমরা সেক্ষেত্রে ধর্ম নিরপেক্ষতার বদলে যদি অন্য কোনো শব্দ এখানে আনা হয় অথবা অন্য কোনো মূলনীতির বিষয়ে আমরা উন্মুক্ত আছি। কিন্তু আমাদের মূল পয়েন্ট হচ্ছে ৭২ এর চারটি মূলনীতি বাদ দিতে হবে।