অন্তর্বর্তী সরকারই তা নির্ধারণ করবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কতদিন মাঠে থাকবে, জানিয়েছে সেনা সদর।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান এই কথা বলেন।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রশাসনকে ৬০ দিন সহায়তা করতে এই তথ্যটি সঠিক নয়। ৬০ দিনের জন্য নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কত দিন থাকব এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কারণ সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে, সরকারই এটা নির্ধারণ করবে কত দিন মোতায়েন থাকা প্রয়োজন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মানবাধিকার লংঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে সেনাবাহিনী ‘অত্যন্ত সচেতন’ উল্লেখ করে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে, সেনাবাহিনী যে কোনো পরিস্থিতিতে তা প্রতিরোধে করবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে এই ধরনের (মানবাধিকার লঙ্ঘন) কোনো ঘটনা যেন ঘটতে না দেই। যে ঘটনাগুলো ঘটছে আপনারা সেগুলো জানতে পারছেন। এর বাইরে আমাদের কার্যক্রমের কারণে কতগুলো পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনো কিছু প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে, এটা হয়তো অনেক সময় জনসম্মুখে আসে না।
এই সেনা সদস্য বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরে এ পর্যন্ত ছয়শ’র বেশি আনরেস্ট হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো ভায়োলেন্ট ছিল। অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা নিয়ে এগুলো যদি সময়মত প্রতিরোধ বা শান্ত করার ব্যবস্থা না করা হত, তাহলে অনেক বেশি ঘটনা ঘটতে পারত।
সেনা সদস্যরা এক ব্যক্তিকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন– এমন একটি ভিডিওর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, পরিস্থিতির প্রয়োজনে অনেক কিছু করতে হয়, তবে সেনাবাহিনী টার্গেট করে কাউকে মেরেছে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশের কাছে অপরাধের যেসব তথ্য থাকে, সেগুলো নিয়েও সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেন, সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পাওয়ার পর অপরাধের সংখ্যা ‘অনেক কমেছে’।
তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়নি, তবে যতটুকু আশা করা গেছে সে অনুযায়ী উন্নতি হয়নি। পুলিশ বাহিনী ধীরে ধীরে তাদের কার্যক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে। অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, গুলশানে একজন মেজরের সঙ্গে একজন পুলিশ কর্মকর্তার ঘটনাটি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ থেকে হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক ‘খুবই ভালো’।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্যই সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।