ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর ম্যাচে বেনফিকার বিপক্ষে ৪-১ গোলের বড় জয় পেয়েছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। তবে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করলেও চরম বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ চেলসি কোচ এনজো মারেস্কা। ম্যাচটি নিষ্পত্তি হতে সময় লেগেছে প্রায় ৫ ঘণ্টা, মূলত এ কারণেই বিরক্ত হয়েছেন মারেস্কা।
দেড় ঘণ্টার একটা ফুটবল ম্যাচ, সেটি শেষ হতে সময় লেগেছে প্রায় ৫ ঘণ্টা! নর্থ ক্যারাইলোনার শার্লটে ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রোববার (২৯ জুন) সকালে শেষ হওয়া ম্যাচটি ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিল। ৬৪তম মিনিটে রিস জেমসের দারুণ ফ্রি কিকের গোলে এগিয়ে ছিল চেলসি।
খেলা তখন শেষের দিকে, মাঠের আশেপাশে শুরু হয় প্রবল ঝড়। শঙ্কা জাগে বজ্রপাত নিয়ে। আবহাওয়ার প্রটোকল অনুযায়ী খেলা বন্ধ করে দেন রেফারি। নির্ধারিত সময়ের তখন বাকি মাত্র মিনিট পাঁচেক।
দীর্ঘ ২ ঘণ্টা বিরতির পর খেলা শুরু হয় আবার। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বেনফিকার আর্জেন্টাইন উইঙ্গার জানলুকা প্রেস্তিয়ানি। ১০ জনের দল নিয়েও হাল ছাড়েনি পর্তুগিজ ক্লাবটি। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে আনহেল ডি মারিয়ার সফল স্পট কিক থেকে সমতায় ফেরে বেনফিকা। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে কোনো গোল হয়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বেনফিকার জালে তিনটি গোল করে চেলসি। রেফারি যখন শেষ বাঁশি বাজালেন, তখন ম্যাচের সময় ৪ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট। অবশেষে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চেলসি।
চলতি ক্লাব বিশ্বকাপে খেলা চলাকালীন সময়ে ঝড় আর বজ্রপাতের শঙ্কায় এ নিয়ে ছয়টি ম্যাচে বিরতি পড়লো। ম্যাচ শেষে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন চেলসি কোচ মারেস্কা। ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা ফুটবল নয়। আমার মতে এটা স্রেফ কৌতুক, এটা কোনোভাবেই ফুটবল হতে পারে না। নিরাপত্তাজনিত কারণ আমি বুঝতে পারি। ম্যাচ স্থগিত হতেই পারে। তাই বলে সাত-আটটি ম্যাচ স্থগিত হবে? তার মানে, এই প্রতিযোগিতার জন্য এটি উপযুক্ত জায়গা নয়।’
‘এই প্রতিযোগিতা দারুণ। ক্লাবের বিশ্বকাপ এটি, বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলি খেলছে। কিন্তু ছয়-সাতটি ম্যাচ স্থগিত হলো! এটা তো স্বাভাবিক নয়। একটা বিশ্বকাপে কয়টা ম্যাচ স্থগিত হতে পারে? সম্ভবত একটিও নয়। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে কয়টি ম্যাচ স্থগিত হবে? একটিও নয়। তার মানে, এখানে সমস্যা আছে।’
শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিততে পেরে চেলসি কোচের কণ্ঠে অবশ্য স্বস্তিও ছিল। ‘দলের পারফরম্যান্সে আমি গর্বিত। ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ বেশ ভালোভাবে চলছিল। এরপর দুই ঘণ্টার জন্য থামানো হলো খেলা। এরপর যখন আমরা মাঠে নামলাম, তখন পুরো ভিন্ন এক খেলা যেন। খেলা আর আগের মতো ছিল না, কারণ ছন্দটাই নষ্ট হয়ে গেছে ততক্ষণে। এতক্ষণ ধরে লকার রুমে বসে থাকা তো সহজ ব্যাপার নয়। আমরা লড়াই চালিয়ে গেছি এবং শেষ পর্যন্ত প্রাপ্য ফল পেয়েছি।’