একের পর এক গুজব চলছে ভারতীয় গণমাধ্যমে। বাংলা প্রদেশ থেকে দিল্লি কিংবা মুম্বাই, রাজ্য কিংবা জাতীয়– বাংলাদেশ নিয়ে একের পর এক গুজব প্রচার করে চলেছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো। ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে ভারতে চলছে একের পর এক নেতিবাচক খবরের ঝড়। বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল এবং অকার্যকর রাষ্ট্র প্রমাণের চেষ্টা চলছে সুনির্দিষ্ট ছকে বাঁধা পরিকল্পনায়।
০৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। শেষ হয় আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলের। এরপরের দুই-তিন দিন সারা দেশে সংঘর্ষ, হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যেই ০৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
এই অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। বিশেষ করে কেবলমাধ্যম হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ করা হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে। সাম্প্রতিক সময়ে বহুল আলোচিত ‘রিপাবলিক বাংলা’ চ্যানেলে একাধিক অনুষ্ঠানে খবর প্রকাশের নামে চলছে গুজব তৈরির প্রতিযোগিতা।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ফেসবুক নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা মেটা’র বাংলাদেশি সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার প্রকাশ করে গুজবের এক সামগ্রিক চিত্র। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, রাষ্ট্র ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১২ আগস্ট থেকে ০৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর পাওয়া গেছে।
এমন ভুয়া খবর প্রচারের তালিকায় ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম উঠে এসেছে। এর মধ্যে রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক ৫টি গুজব প্রচার করেছে। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ এবং লাইভ মিন্ট, যারা প্রত্যেকে অন্তত ৩টি করে গুজব প্রকাশ করেছে। এছাড়া, রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ এবং আজতক অন্তত ২টি করে গুজব প্রচার করেছে। ৪১টি গণমাধ্যম অন্তত একটি করে গুজব প্রচার করেছে।
পাকিস্তানি পেঁয়াজের চালানকে অস্ত্র বলে প্রচার করা, প্রধান উপদেষ্টার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া, মাশরাফি বিন মর্তুজার বাড়িকে লিটন দাসের বাড়ি বলে প্রচার কিংবা নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী হিসেবে প্রচারের মতো কাজগুলো ব্যাপক শোরগোল ফেলেছে বাংলাদেশ ও ভারতের সাধারণ মানুষের মাঝে।