ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ারকে এককালীন ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। গত জুন মাসে এই অর্থ পরিশোধের ফলে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত আদানির পাওনা ছিল এমন সব অর্থই ‘সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বুধবার (০২ জুলাই) এই অর্থ আদানি পাওয়ার এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় এককালীন অর্থপ্রাপ্তি বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস। আগে তারা প্রতিমাসে বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে পেত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের আদানি পাওয়ারের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিপরীতে বাংলাদেশের সব বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। জুন মাসে এককালীন ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে মার্চ পর্যন্ত বকেয়া মিটিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যয় এবং বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয়ের মীমাংসা হয়ে গেছে। এখন বাংলাদেশের আর কোনো বকেয়া নেই, বরং দুই মাসের বিলের সমপরিমাণ এলসি (ঋণপত্র) এবং সব বকেয়ার জন্য সার্বভৌম গ্যারান্টিও বাংলাদেশ দিয়ে রেখেছে।
পাওনা সংক্রান্ত ঝামেলা না থাকায় আদানি পাওয়ারকে তাদের ঝাড়খণ্ড কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকেই নির্ধারিত হারে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, গত তিন-চার মাস ধরে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ।
ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। সব পাওনা পরিশোধের পর এখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আদানিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন দুইটি ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ইউনিটই বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী চালু থাকে।
চুক্তি অনুযায়ী, ৩০ জুনের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধ করলে বিলম্ব ফি মওকুফ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশ সময়মতো পরিশোধ করায় সেই সুবিধা পেয়েছে। পাশাপাশি এখন থেকে বিল পরিশোধের বিষয়টি নিয়মিত করতে
সরকার ১৮০ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ একটি এলসি খুলেছে এবং বাকি পাওনার জন্য রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিও দিয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে ইকোনমিক টাইমসের আরেক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের বকেয়ার পরিমাণ তখন প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। কোম্পানিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা দিলীপ ঝা তখন জানান, ২০২৫ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশ ১.২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। বিলম্বে পরিশোধের কারণে অতিরিক্ত ১৩৬ মিলিয়ন ডলার হিসেব করা হয়েছিল।