বেনাপোল কাস্টমস হাউস ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বছর ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। তবে আদায় হয়েছে ৭ হাজার ২১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি।
কাস্টমস সূত্র জানায়, আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছিল। সেবছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। আদায় হয়েছিল ৬ হাজার ১৬৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যা লক্ষ্য ছাড়িয়ে ২১৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বেশি।
কাস্টমস ও বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, কলমবিরতি ও শাটডাউনের মতো পরিস্থিতির মধ্যেও বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ের এই সাফল্য এসেছে কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার কারণে। কমিশনারসহ কর্মকর্তারা দফতরে উপস্থিত থেকে নিয়মিত তদারকি করায় এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে বলে জানান ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মতিয়ার রহমান।
ভারতের সঙ্গে স্থলপথে দেশের মোট আমদানির প্রায় ৮০ শতাংশই হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয় এই বন্দর দিয়ে। এর বিপরীতে সরকার প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায়।
চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪০ দশমিক ২১ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। আগের বছর এই পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৯৫৪ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন। অর্থাৎ আমদানি কমলেও রাজস্ব আয় বেড়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা জানায়, শুল্ক ফাঁকি রোধ ও সঠিক শুল্কায়নই এই অর্জনের মূল কারণ।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, প্রতিদিন বন্দর দিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হচ্ছে এবং ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক রপ্তানি হচ্ছে। কাস্টমসের কঠোর নজরদারিতে রাজস্ব ফাঁকি অনেক কমে এসেছে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মামুন তরফদার জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৪৪০ দশমিক ৭৭ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের বছর এই পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭৭৪ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, আমদানি কিছুটা কমলেও রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এটি কাস্টমস হাউসের একটি বড় অর্জন। তিনি আরও জানান, শুল্ক ফাঁকি রোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।