কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: জুলাই বিপ্লবের আন্দোলন ও আবেগকে অবমাননা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্য করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে ছাত্র সমাজ ও সাধারণ জনগণ।
কুষ্টিয়া শহরের মজমপুরে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ফারজুল ইসলাম রনি মঙ্গলবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘জুলাই বিপ্লব’ নিয়ে একটি অবমাননাকর স্ট্যাটাস দেন। বিষয়টি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাঝেও তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে ট্রাফিক কনস্টেবল ফারজুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর শাস্তির দাবিতে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয় সামনের মহাসড়ক অবরোধ করে রাত ৯টা থেকে রাত ১ পর্যন্ত চলে প্রতিবাদ কর্মসূচি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেলার বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল ১ই জুলাই আমরা জুলাই ২৪ এর দিনগুলোকে স্মরণ করছি । পুরো বাংলাদেশ এই জুলাই মাস কে কেন্দ্র করে নতুন ভাবে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে, কিন্তু সেই জুলাইয়ের আন্দোলনকে কটুক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন কুষ্টিয়ার মজমপুরে দায়িত্বরত ফারজুল ইসলাম রনি নামে এক ট্রাফিক পুলিশ । গতরাতে আমরা দ্রুত তার শাস্তি দাবি জানিয়ে মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছিলাম।
এছাড়াও তিনি আরো জানান, আজ ২ জুলাই দুপুর ৩ টায় কুষ্টিয়া জেলার জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন আহত যোদ্ধা কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কাছে যান ফারজুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তির দাবি নিয়ে।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তাদেরকে বলেছেন আগামী ৮ ই জুলাই পর্যন্ত তাদের সময় দিতে হবে তার বিরুদ্ধে আইনত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিক্ষোভকারীরা তাদের বিক্ষোভ সাময়িক বন্ধ করেন এবং আগামী ৮ই জুলাইয়ের মধ্যে সেই আলোচিত ট্রাফিক পুলিশ ফারজুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা না নিলে আবার কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সত্যতা পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ট্রাফিক কনস্টেবল ফারজুল ইসলাম রনিকে ক্লোজড করা হয়েছে। আপাতত তিনি ছুটিতে আছেন তার ছুটিও বাতিল করা হয়েছে । বিষয়টি সত্যিই অনেক স্পর্শকাতর। আমরা দ্রুতই এই ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ।
এ বিষয়ে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য সুলতান মারুফ তালহা জানিয়েছেন, আমরা জানতে পেরেছি ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল কে আপাতত ক্লোজড করা হয়েছে । আজ দুপুরে জুলাই আন্দোলন আহত হয়েছেন এমন ৬০ থেকে ৭০ জন ফাজরুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিতে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েছিলেন এবং পুলিশ সুপার খুব আন্তরিকতার সাথে দ্রুতই অভিযুক্ত ট্রাফিক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে আমরা ৮ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করব এর মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা না হলে আমরা আবার কঠোর আন্দোলনের যাবো।